লাল সবুজের বর্ণিল সাজে সেজেছে জাদুর নগরী

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২০
Image উজ্জ্বল এ গমেজ
news-banner
  ছবি: টেকভয়েস২৪
বিজয় দিবসের আনন্দে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে রাজধানী ঢাকাকে। ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসকে স্মরণীয় কর রাখতেই রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা, অফিস-আদালত, বাসা-বাড়ি, বিভিন্ন সড়ক, সড়কদ্বীপ ও ভবনে শোভা পাচ্ছে নানা রঙের বাতি।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর রঙ-বেরঙের আলোকচ্ছটায় ঝলমলিয়ে ওঠেছে পুরো ঢাকা। রক্তের লাল আর শ্যামল সবুজ বর্ণের আলোকসজ্জা যেন এক উজ্জ্বল পতাকা। আলোকিত ঢাকা দেখে মুগ্ধ রাজধানীবাসী। সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ। ৪৯তম বিজয় দিবস পূর্ণ হলো এবার। আর এর উপলক্ষে লাল সবুজ আলোয় সেজেছে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশ। হালকা শীতের উপস্থিতি বিজয়ের আনন্দ যেন কোটি বাঙালির হৃদয়কে আপ্লুত করে যাচ্ছে। আর আনন্দে বর্ণিল সাজে সাজিয়ে বিজয়ের আলোয় নিজেদের ভাসিয়ে বাঙালির শৃঙ্খলমুক্ত হওয়ার দিনটি এভাবেই প্রাণভরে উদযাপন করছেন সবাই। গৌরব আর অহংকারের এ দিনে বিজয়ের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে ঢাকার অলিগলিও।

রাজধানীর মতিঝিল, কারওয়ান বাজার, বাংলামটর, ফার্মগেট, শাহবাগ, কাঁটাবন, সংসদ ভবন এলাকা, শেরে বাংলা নগর, পল্টন, মোহাম্মদপুর, বিজয় স্মরণী, মহাখালী, মগবাজার, মিরপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ধর্ম-বর্ণ, ধনী-গরীব সবাই মিশে একাকার হয়ে গেছে। লাল-সবুজের আবহ মিশিয়ে বাংলাদেশের পতাকার আদলে করা বিভিন্ন ভবনে আলোকসজ্জা ছিল দৃষ্টিনন্দন। ভবনে বাতির ঝলমলে ফুটে উঠেছে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা।

সন্ধ্যা থেকেই রাজধানীর ঢাকার বিভিন্ন ভবনের সামনে ঘুরে ঘুরে বর্ণিল আলোকসজ্জা দেখে বেড়াচ্ছেন অনেকেই। আবার কেউ কেউ তুলছেন সেলফি। এ যেনো অন্যরকম পুলক। মনকড়া এমন আলোকসজ্জায় মুগ্ধ সবাই। এ আলোকসজ্জা দেখে মুগ্ধ কর্মব্যস্ত মানুষও। অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছেনে আবার অনেকে সুন্দর এ দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করছেন।

কারওয়ান বাজারের বাসিন্দা তুহিন আহমেদ বিবার্তাকে বলেন, আমাদের মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীতে যে আলোকসজ্জা করা হয়েছে; তা আসলে মনোমুগ্ধকর। এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য নিজ চোখে না দেখলে কেউ উপভোগ করতে পারবে না।

পশ্চিম তেজতুরি বাজারের বাসিন্দা লোকমান মিয়া বিবার্তাকে বলেন, তাদের এলাকায়ই সরকারি-বেসরকারি ভবনগুলো আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি বাসায় ছোট থেকে বড়দের মধ্যে বিজয়ের আন্দন বিরাজ করছে।

এদিকে, যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-২০২০ উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তবে কোভিড -১৯ প্রাদুর্ভাবের কারণে এ বছর বিজয় দিবস কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে না। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রত্যুষে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এরপর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

দিনটি সরকারি ছুটির দিন। সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনাসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ সমূহ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী প্রদান করেছেন।

দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এদিন সংবাদপত্র সমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে। এ উপলক্ষে ইলেকট্রনিক মিডিয়াসমূহ মাসব্যাপী মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। এছাড়াও বিজয় দিবস উপলক্ষে ভার্চুয়াালি ‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে ।

Leave Your Comments