দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোনের ওপর আরোপিত মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের হার বাড়ানো হতে পারে। বর্তমানে উৎপাদন পর্যায়ে এই হার বৈশিষ্ট্যভেদে ৫ শতাংশ ও ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। আসন্ন বাজেটে এই হার আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ করে বৃদ্ধির প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
আগামী ২ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেটে মোবাইল ফোনের ওপর ভ্যাট বাড়ানোর এই নতুন প্রস্তাব করা হতে পারে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কোনো মোবাইল ফোন উৎপাদনকারী কোম্পানি যদি নিজেরা কমপক্ষে দুটি কম্পোনেন্ট বা উপকরণ বানায় এবং বাকি উপকরণ আমদানি করে দেশে সংযোজন করে, তাহলে উৎপাদন পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এই হার বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হতে পারে। আবার কোনো প্রতিষ্ঠান যদি সব উপকরণ আমদানি করে দেশে শুধু সংযোজন করে, তাহলেও এখন ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়। এটি বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হতে পারে।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, প্রযুক্তি দিন দিন সুলভ হচ্ছে, তাই বাড়তি ভ্যাট দিলেও দামের ওপর প্রভাব না–ও পড়তে পারে।
স্মার্টফোনের চাহিদার বড় অংশ দেশে উৎপাদিত হয়। ফলে দেশে স্মার্টফোনের ব্যবহার গত কয়েক বছরে ব্যাপক হারে বেড়েছে।
দেশে এখন ১৭টির মতো প্রতিষ্ঠান স্মার্টফোন উৎপাদন ও সংযোজন করে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, স্মার্টফোনের যন্ত্রাংশ আমদানি ও উৎপাদন বিক্রির ক্ষেত্রে কর কমাতে হবে।
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমআইওবি) সহসভাপতি রেজওয়ানুল হক জানান, সরকার যে উদ্দেশ্যে ভ্যাট বাড়াতে চাইছে, তা পূরণ হবে না, যতক্ষণ অবৈধ উপায়ে স্মার্টফোন আসা বন্ধ না হয়। স্মার্টফোনের ৫০ শতাংশের বেশি এই অবৈধ বাজারের দখলে। দেশীয় ফোনের ওপর ভ্যাট বাড়ালে অবৈধ ফোনের বাজার আরও বড় হবে। তাঁর মতে, নতুন করে ভ্যাট বাড়লে প্রতিটি মোবাইল ফোনে ৫০০ টাকা বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশে স্মার্টফোন ব্যবহার করে ৭০ শতাংশ পরিবার। অন্যদিকে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) গত বছরের অক্টোবরে ‘দ্য স্টেট অব মোবাইল ইন্টারনেট কানেকটিভিটি ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশে শহরের ৪১ শতাংশ এবং গ্রামের ২৬ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। সূত্র: প্রথম আলো।