বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ব্যাংক একীভূতকরণে আমানতকারীদের ভয়ের কিছু নেই। সরকার এসব ব্যাংক সাময়িক সময়ের জন্য অধিগ্রহণ করে কৌশলগত বিদেশি বড় বিনিয়োগকারীর হাতে দেবে। সরকার কোনো ব্যাংক অধিগ্রহণ করলে আমানতকারীদের চিন্তার কোনো কারণ থাকে না। বর্তমান কর্মী এবং আমানতকারীরা শক্তিশালী ব্যাংকের অংশীদার হবেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে বিএফআইইউর ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপপ্রধান কাওছার মতিনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে বার্ষিক প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন বিএফআইইউর পরিচালক মুহাম্মদ আনিছুর রহমান। অপর পরিচালক মোস্তাকুর রহমান বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর আমানতকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যে ব্যাংকে আছেন, সেখানেই থাকুন। আইন অনুযায়ী এসব ব্যাংক প্রথম সরকারীকরণ করা হবে। এর পর সরকার থেকে টাকা দেওয়া হবে। এভাবে পুনর্গঠন করে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
ক’টি ব্যাংক একীভূতকরণের আওতায় আসবে- এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, ‘প্রথমে আমরা কয়েকটি ব্যাংক দিয়ে শুরু করব। পর্যায়ক্রমে আরও কয়েকটি, তারপর আরও কয়েকটি-এভাবে হবে।’
চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৫ মে পর্যন্ত এসটিআর হয়েছে ২৭ হাজার ১৩০টি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের পুরো সময়ে যেখানে এসটিআর হয়েছিল ১৭ হাজার ৩৪৫টি। ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় যা ছিল ২৩ শতাংশ বেশি। ওই অর্থবছরে এসটিআর হয় ১৪ হাজার ১০৬টি।
গভর্নর বলেন, রিপোর্টিং বৃদ্ধি মানেই সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে- তেমন নয়। সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে রিপোর্ট বেশি হয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বিগত সরকারের সময় দেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাচার হয়েছে। নির্দিষ্টভাবে এখনই পরিমাণ বলা যাবে না। তবে তা ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার হতে পারে।
তিনি বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষ করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে চার থেকে পাঁচ বছর লাগতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগের কারণে এরই মধ্যে বিদেশে কিছু অর্থ জব্দ হয়েছে।