অনেক স্মার্টফোন ব্যবহারকারী প্রায়ই একটি সমস্যার মুখোমুখি হন-ফোন ব্যবহার না করলেও দ্রুত চার্জ কমে আসে, আর মোবাইল ডেটাও শেষ হয়ে যায় চোখের পলকে। এর পেছনে অন্যতম কারণ কিছু ‘ভ্যাম্পায়ার অ্যাপ’-যেগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে অজান্তেই ডেটা ও ব্যাটারি খরচ করে ফেলে। প্রযুক্তিবিদদের মতে, এমন অ্যাপগুলো ফোনের জন্য রীতিমতো রাক্ষস!
চলুন দেখে নিই, কোন কোন কারণেই ফোনের চার্জ ও ডেটা অপ্রয়োজনীয়ভাবে ফুরিয়ে যাচ্ছে:
১. ব্যাকগ্রাউন্ডে চলতে থাকা অ্যাপ
অনেক অ্যাপ সরাসরি ব্যবহার না করলেও পেছনে চালু থেকে বিভিন্ন কাজ করে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, নিউজ অ্যাপ, বা ইমেইল ক্লায়েন্ট-সবই সার্ভারের সঙ্গে নিয়মিত তথ্য আদান-প্রদান করে। কিছু অ্যাপ আবার তথ্য আগেই ডাউনলোড করে নেয় (‘প্রিফেচিং’), যেন পরবর্তীতে দ্রুত লোড হয়। এভাবে অজান্তেই বাড়ে ডেটা খরচ।
২. লোকেশনভিত্তিক অ্যাপের অতিরিক্ত কার্যক্রম
নেভিগেশন অ্যাপ যেমন গুগল ম্যাপস বা ওয়েজ চালু থাকলে ফোন বারবার লোকেশন আপডেট করে। এতে ডেটা ও ব্যাটারি দুটোই দ্রুত শেষ হয়ে যায়।
৩. ভিপিএন ব্যবহারে বাড়তি ডেটা খরচ
ভিপিএন ব্যবহার নিরাপত্তার জন্য ভালো হলেও এতে ডেটা খরচ ৪-২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। কারণ, প্রতিটি তথ্য প্যাকেট এনক্রিপ্ট হয়ে যায়, যা বেশি ডেটা নেয়।
৪. পুশ নোটিফিকেশন
ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, মেসেঞ্জার বা নিউজ অ্যাপ প্রায়ই নোটিফিকেশন পাঠায়। এই সেবাগুলো সচল রাখতে অ্যাপগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে সক্রিয় থাকে, যা বাড়তি ব্যাটারি ও ডেটা খরচ করে।
৫. স্ট্রিমিং অ্যাপে ডেটা স্রোত
ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, স্পটিফাই বা ডিজনি+ অ্যাপে ভিডিও বা গান চালাতে অনেক ডেটা লাগে। স্পটিফাই তো ব্যাকগ্রাউন্ডেও চালু থাকে এবং আপনার মিউজিক লাইব্রেরি সিঙ্ক করে, যা আরও ডেটা নেয়। তবে স্পটিফাইয়ের ডেটা সেভার মোড চালু করলে কিছুটা সাশ্রয় করা যায়।
৬. অটো-প্লে ভিডিও ফিচার
ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ ভিডিও চলা শুরু করে-এই ফিচারটিই অজান্তে অনেক ডেটা খরচের কারণ। চাইলে অ্যাপের সেটিংসে গিয়ে ‘অটো-প্লে’ বন্ধ করে রাখা যেতে পারে।
৭. গুগল প্লে স্টোরের স্বয়ংক্রিয় আপডেট
অনেক সময় ফোন নিজে থেকেই ব্যাকগ্রাউন্ডে অ্যাপ আপডেট ডাউনলোড করে নেয়, যা ডেটা শেষ করে ফেলতে পারে। প্লে স্টোরে গিয়ে সেটিংসে ‘Wi-Fi only’ নির্বাচন করলে এই সমস্যা এড়ানো যায়।
৮. ক্ষতিকর অ্যাপ বা ম্যালওয়্যার
কখনো কখনো সন্দেহজনক অ্যাপ গোপনে ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করে এবং আপনার অজান্তেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এসব অ্যাপ ফোনের নিরাপত্তা এবং ডেটা-দুটোর জন্যই ক্ষতিকর।
করণীয় কী?
>>ব্যাকগ্রাউন্ড ডেটা ব্যবহারে সীমা নির্ধারণ করুন
>>লোকেশন ও অটো-আপডেট বন্ধ রাখুন
>>সন্দেহজনক অ্যাপ ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকুন
>>সময়-সময় ফোনের ব্যাটারি ও ডেটা ইউজ চেক করুন
সূত্র: অ্যান্ড্রয়েড পুলিশ