পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ংক্রিয় সব কার্যক্রম বাস্তবায়নে কারিগরি ও প্রযুক্তি সহায়তা দেবে সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) গাজীপুরের মাওনায় একটি রিসোর্টে অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের জন্য অনলাইন প্রশিক্ষণ কনটেন্ট উন্নয়ন’ বিষয়ে কর্মশালায় যোগ দিয়ে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত তিনদিনের এ কর্মশালায় কারিগরি সহায়তা প্রদান করে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই প্রোগ্রাম ও ইউনিসেফ বাংলাদেশ। কর্মশালায় অনলাইন প্রশিক্ষণ ডিজাইন ও স্ক্রিপ্ট রাইটিং, প্রশিক্ষণ স্ক্রিপ্ট ও কনটেন্ট ভ্যালিডেশন এবং অনলাইন প্রশিক্ষণের কনটেন্ট চূড়ান্তকরণ নিয়ে আলোচনা হয়।
এতে অংশ নেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের আইসিটি শিক্ষক, শিক্ষক প্রশিক্ষক, অনলাইন প্রশিক্ষণ ডিজাইন ও কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট এক্সপার্ট এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশ, এটুআই প্রোগ্রাম ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, দ্রুত বিভিন্ন পরীক্ষার ফল প্রকাশের লক্ষ্যে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ব্যবহারসহ প্রযুক্তিগত যে কোনো উদ্যোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশেষ সহকারী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজের সংখ্যা ২ হাজার ২৫৭টি। যাতে অধ্যয়ন করছেন ৩৫ লাখের বেশি শিক্ষার্থী। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা দেশের উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর ৭০ শতাংশ। তাদের বেশিরভাগই মধ্য ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। পুরোনো ও গতানুগতিক সিলেবাসে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করার পর তাদের বেশিরভাগই বেকার থাকে। কারণ কারিগরি ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার অভাব।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আরো বলেন, এ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার মতো দক্ষ করে গড়ে তুলতে স্নাতকে আইসিটি ও ইংরেজি বাধ্যতামূলক করাসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। যুগোপযোগী এ উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়নে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ সার্বিক সহযোগিতা করবে।
দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে মানবসম্পদ গড়ে তুলতে অনলাইন প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, অনলাইন শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম একটি সময়োপযোগী ও অবাশ্যকীয় একটি উদ্যোগ। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে যুক্ত হয়ে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় সমান সুযোগ লাভ করে।
কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে গৃহীত নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর শিক্ষায় যথাযথ বিনিয়োগ না করায় দেশ এখনো সমসাময়িক অন্যান্য দেশের চেয়ে পিছিয়ে আছে। তাই বিলম্ব হলেও শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়ার সময় এখনই। আইসিটি কোর্সের শিক্ষাক্রম প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করার পর সরকারের এটুআই ও ইউনিসেফের সার্বিক সহায়তায় এখন পর্যন্ত অর্জিত ফল খুবই ভালো। আশা করি, খুব শিগগির এ শিক্ষাক্রম চালু করা সম্ভব হবে, যা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীরা যে কোনো কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা হওয়ার মতো দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।
অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন ইউনিসেফের চিফ অফ এডুকেশন দীপা শংকর। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এটুআই প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুর রফিক, পলিসি অ্যানালিস্ট আফজাল হোসেন সারওয়ার, হেড অফ প্রোগ্রাম আব্দুল্লাহ আল ফাহিম ও ইউনিসেফের এডুকেশন স্পেশালিস্ট রফিকুল ইসলাম সুজন।