বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের তিন দিনে বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যাল, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, আইটি খাতে আগ্রাহ দেখিয়েছেন সফররত বিনিয়োগকারীরা। তবে এটা ছাপিয়ে দেশের প্রতিরক্ষা শিল্প খাতের জন্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের খুঁজছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। এই শৌখিন স্কাইডাইভার মনে করেন, কারিগরি সক্ষমতা অর্জনে সামরিক খাতেও কিছু উন্নয়ন দরকার। আর এজন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বৃহত্তম শিল্প সরবরাহকারী বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিজ ( বিওএফ ) এর এজন্য কিছু মৌলিক দক্ষতাও রয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করেই সামরিক সরঞ্জাম তৈরির করাখানা স্থাপনের বিষয়টি নিয়ে ভাবা দরকার।
বুধবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিনিয়োগ সম্মেলনের তৃতীয় দিন শেষে বিনিয়োগ পরিস্থিতির সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে এমন অভিব্যক্তিই ফুটে ওঠে তার কণ্ঠে।
সদ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া এই তরুণ নেতা বললেন, আমরা ইন-প্রিন্সিপালি মনে করি যে, টেকনোলজ্যিকাল এডভান্সমেন্টের জন্য মিলিটারি সাইডেও আমাদের কিছু এডভ্যান্সমেন্ট করা দরকার। আমাদের যে অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টিরি আছে তাদের কিন্তু অলরেডি কিছু ইন্ডেজিনাস স্কিলসেটও আছে। আমরা সেটার ওপর ভর করে ম্যানেফ্যাবচারিং হাবের গল্পটা ক্লাসিক কর্মাশিয়াল ইন্ডাস্ট্রির জন্য যেমনটা বলছি, তেমনটা মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রির জন্যও বলতে হবে। আমাদেরকে ট্যাংক বানাতে হবে না। স্পেসশিপ, ফাইটার জেট বানোনো দরকার নেই। তবে ছোট পরিসরে হলেও অ্যাডভান্স রেডিও, ট্যাঙ্কের এক্সেপ্ট, স্মল বুলেট, স্মল আর্ম তৈরি করা যেতে পারে। এগুলো হিউজ ডিমান্ড আছে।
আশিক জানালেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী মিলে সামরিক শিল্পে কাজ করতে পারে সে জন্য এমন বিদেশী বিনিয়োগকারীদের খোঁজা হচ্ছে যারা টেকনোলজি ট্রান্সফারের মাধ্যমে বাংলাদেশে আসতে রাজি হবে। তারা বাংলাদেশে এসে এগুলো বানাবে এবং বাংলাদেশ তাদের কাছ থেকে সেই উৎপাদিত সামরিক যন্ত্র কিনবে। আবার আঞ্চলিক বাজারে সেগুলো রফতানি করারও সুযোগ দেয়া হবে। এজন্য একটি মিলিটারি ইকোনোমিক জোনও করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন তিনি।
তিনি বললেন, মিলিটারি ইকোনোমিক জোন তৈরি একটা লং জার্নি। কেননা, এজন্য পলিসি ইন্ডারভেনশন লাগবে। সিকিউরিটি পলিসি লাগবে। ডিজিটাল ডেটা পলিসি ও আইপি রাইট লাগবে। এগুলো সলভ করে আমাদের ওখানে যেতে হবে। সেই কাজ শুরু হয়েছে। একটু সময় লাগবে।
এর আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের বিষয়ে মতপার্থক্য থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করে আশিক চৌধুরী বলেন, ‘যে দলই ক্ষমতায় আসুক, বিনিয়োগের স্বার্থগুলো অপরিবর্তিত রাখতে চায় বিডা। সে লক্ষ্যে সব রাজনৈতিক দলকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
বিডার চেয়ারম্যান আরো জানান, চীনের পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হান্ডা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড বাংলাদেশে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। তাদের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে এর মাধ্যমে ১৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। এ ছাড়া মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের কাছে একটি মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল স্থাপনের আগ্রহ দেখিয়েছে বৈশ্বিক বন্দর পরিচালনাকারী সংস্থা ডিপি ওয়ার্ল্ড। সংস্থাটিকে সার্বিক সহযোগিতা করবে বাংলাদেশ।