আউটসোর্সিং ধারণায়ন

প্রকাশ: শুক্রবার, ২৪ জুলাই, ২০২০
Image টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
news-banner
  ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে ইন্টারনেটের বিকাশের ফলে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য ঘরে বসে অন্য দেশের কাজ করে দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে৷  আউটসোর্সিং (Outsourcing) হচ্ছে একটি প্রতিষ্ঠানের কাজ নিজেরা না করে বাইরের কোন প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তির সাহায্যে করিয়ে নেয়া। এই কাজ হতে পারে কোনো প্রকল্পের অংশ বিশেষ অথবা সমগ্র প্রকল্প।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজেদের অনেক কাজ, যেমন- ওয়েবসাইট উন্নয়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, মাসিক বেতন, ভাতার বিল প্রস্তুতকরণ, ওয়েবসাইটে তথ্য যুক্তকরণ, সফটওয়্যার উন্নয়ন ইত্যাদি অন্য দেশের কর্মীদের মাধ্যমে সম্পন্ন করে থাকে৷ এটিকে বলা হয় আউটসোর্সিং (Outsourcing) ৷

আরও সহজভাবে বললে, ইন্টারনেটের ব্যাবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ধরনের কাজ করিয়ে নেয়। নিজ প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কাউকে দিয়ে এসব কাজ করানোকেই বলা যায় আউটসোর্সিং।

বাংলাদেশের জনসংখ্যার বড় অংশই এখন তরুণ। আর তরুণরাই পারে একটি দেশের অর্থনীতির গতি পরিবর্তন করতে। মোট জনসংখ্যার ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী মানুষের সংখ্যা এখন বেশি, যা জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ (উৎস- CIA – The World Factbook)।

২০১৮ – ২০১৯ সালের মধ্যে এটা ৬০ শতাংশে উন্নীত হবে। কোনো দেশের তরুণ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা যখন আনুপাতিক হারে সবচেয়ে বেশি থাকে তখন তাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড (Demographic Dividend) বা ডেমোগ্রাফিক বোনাস (Demographic Bonus) বলে।

এ অবস্থাকে আবার উইন্ডোজ অব অপরচুনিটিও (Windows of Opportunity) বলা হয়ে থাকে। এর মাধ্যমে কোনো দেশের উন্নয়নের সম্ভাবনাময় দুয়ার খুলে যেতে পারে। আর যদি সঠিক সময়ে তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগানো না যায় তাহলে তা যেকোনো দেশের জন্য বোঝা ও মারাত্মক বিপদের কারণ হবে।

বাংলাদেশের এই শিক্ষিত বিপুল কর্মক্ষম জনগণকে অনলাইনে আউটসোর্সিং কাজের যোগ্য হিসেবে অথবা ফ্রিল্যান্সার হিসাবে গড়ে তোলা অন্যতম ফলপ্রসূ সমাধান হতে পারে।

ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing) হচ্ছে যখন কোন ব্যক্তি কোন নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজ না করে চুক্তিভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির কাজ করে থাকেন। একজন ফ্রিল্যান্সারের যেরকম রয়েছে কাজের ধরণ নির্ধারণের স্বাধীনতা, তেমনি রয়েছে যখন ইচ্ছা তখন কাজ করার স্বাধীনতা।

গতানুগতিক অফিস সময়ের মধ্যে ফ্রিল্যান্সার স্বীমাবদ্ধ নয়। কোম্পানিগুলো সাধারণত আউটসোর্সিং করে উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য। অনেক সময় পর্যাপ্ত সময়, শ্রম অথবা প্রযুক্তির অভাবেও আউটসোর্সিং করা হয়।

মূলত তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর কাজগুলো (যেমন – Web Development, Software Development, Writing & Content, Design, Multimedia & Architecture, SEO/SEM/SMM, Data Entry ইত্যাদি) আউটসোর্সিং করা হয়।

যেসকল দেশ এই ধরনের সার্ভিস প্রদান করে থাকে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ভারত, ইউক্রেন, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইন্দোনেশিয়া, চীন, ফিলিপিন, রাশিয়া, পাকিস্তান, পানামা, নেপাল, বাংলাদেশ, রোমানিয়া, মালয়েশিয়া, মিশর এবং আরো অনেক দেশ।

বাংলাদেশে আউটসোর্সিং নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে সেটা মূলত ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে উন্নত বিশ্বের আউটসোর্সিং। ব্যবসায়িকভাবে আউটসোর্সিং সার্ভিসের শিল্পটা এখনো সেভাবে গড়ে ওঠেনি। এটা ঠিক আউটসোর্সিং সার্ভিস দেয় এমন অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে এবং দিন দিন এটি বাড়ছে।

image

আপনার মতামত দিন