একটি জাতীয় ই-কমার্স ডেটা হাব প্রতিষ্ঠা করা জরুরি: সোহেল মৃধা

প্রকাশ: রবিবার, ১০ অগাস্ট, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png উজ্জ্বল এ গমেজ
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা। পেশাগত জগতে সোহেল মৃধা নামেই বেশি পরিচিত। প্রায় ২৫ বছরের কর্মজীবনের শুরুটা হয় একটি স্বনামধন্য বীমা কোম্পানির মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে। ২০০০ সালের দিকে একটি স্বনামধন্য সুইডিশ বেইজড বায়িং হাউজে মার্চেন্ডাইজার হিসেবে যোগ দেন। শুরু হয় আরএমজি সেক্টরের যাত্রা। অর্জিত অভিজ্ঞতা দিয়ে ২০০৯ সালের আগস্ট মাসে প্রতিষ্ঠা করেন নিজের বায়িং হাউজ। তখন থেকে কাজ করে আসছেন। তবে তার সব সময় মূল ফোকাস ছিল তথ্যপ্রযুক্তি ও ডিজিটাল ব্যবসায়।

কেননা তার ভাল লাগার জায়গা ছিল প্রযুক্তির জগত। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন কিনলে ডটকম। এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম সারির ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলোর একটি। সেই সময়ে ই-কমার্স কেবল কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। তিনি ও  কয়েকজন প্রযুক্তিপ্রেমী উদ্যোক্তা মিলে ই-কমার্স খাতে প্রথম একটি পূর্ণাঙ্গ ইকোসিস্টেম তৈরির চেষ্টা করেন। এই ইকোসিস্টেমে পেমেন্ট, লজিস্টিকস এবং গ্রাহকসেবা সবই সমন্বিত ছিল। এই প্ল্যাটফর্মটি তাকে ধারণা দেয় ই-কমার্স খাতের গভীর চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে । তাছাড়া ২০১৬ সালে  ‘কিনলে জবস’ নামে একটি জব সাইট চালু করেন, যা পরবর্তীতে ‘ইজবস ওয়ান’ নামে সীমিত পরিসরে চলমান আছে। এছাড়া ট্যুরিজম স্টাডি অ্যাব্রোড ব্যবসাগুলির সাথেও জড়িত আছেন।

এই অভিজ্ঞতা থেকে প্রযুক্তিপ্রেমী উদোক্তা উপলব্ধি করেন দেশের ই-কমার্স খাতকে একটি সুসংহত কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে একটি বাণিজ্যিক সংগঠনের প্রয়োজন। এই ভাবনা থেকেই ২০১৪ সালে  তিনি ও কয়েকজন স্বপ্নবাজ প্রযুক্তিপ্রেমী উদ্যোক্তা মিলে প্রতিষ্ঠা করেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। ই-ক্যাবের কল্যাণে সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ পান তিনি, যা ডিজিটাল কমার্স পলিসি তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও, তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে মার্চেন্ডাইজিং প্রোডাকশন মার্কেটিং, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টও নিয়ে কাজ করেছেন। সেসাথে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উল্লিখিত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য কনসালটেন্সিও করে আসছেন। অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, একটি সফল ই-কমার্স ব্যবসা কেবল পণ্য কেনাবেচার মাধ্যম নয়, এটি একটি বিশ্বাস, প্রযুক্তি এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনার সমন্বয়।

সম্প্রতি টেকভয়েস২৪-এর মুখোমুখি হন প্রযুক্তিপ্রেমী উদ্যোক্তা ও ই-কমার্স খাত বিশ্লেষক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক মৃধা। একান্ত আলাপে কিনলে ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও ই-ক্যাবের প্রতিষ্ঠাতা এই সদস্য জানান ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির এগিয়ে যাওয়ার নেপথ্যের বাধা, সেগুলো অতিক্রম করার পরামর্শ, মূলধারার ই-কমার্স ব্যবসায় নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের অবস্থা, ই-কমার্সের বর্তমান হালচালসহ ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে গঠনমূলক ও আশাবাদী নানান কথা। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন টেকভয়েস২৪-এর হেড অব অনলাইন উজ্জ্বল এ গমেজ।

টেকভয়েস২৪: ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি জানতে চাই।
মোহাম্মেদ মোজাম্মেল হক মৃধা:
বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় বা বাঁক বদলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এর প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়েছিল। বর্তমানে এটি স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে। ই-ক্যাব এবং বাংলাদেশ ব্যাংকয়ের ডেটা অনুযায়ী, দেশের ই-কমার্স বাজারের আকার এখন প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। লেনদেনের পরিমাণ প্রতি বছর প্রায় ২৫-৩০% হারে বাড়ছে। স্মার্টফোন ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে এখন দেশের প্রায় ১২ কোটিরও বেশি মানুষ অনলাইনে যুক্ত।

আমার মতে, এই প্রবৃদ্ধিটি মূলত রাজধানী শহরে বা বিভাগীয় শহরাঞ্চলে কেন্দ্রীভূত। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের শহরগুলোতে মানে জেলা উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় এখনও ই-কমার্স সেবার পূর্ণাঙ্গ বিস্তার ঘটেনি। আমি মনে করি, এই খাতটি আস্থার সংকটে ভুগছে। ২০২১-২২ সালে কিছু বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণার ঘটনায় শত শত কোটি টাকা ক্ষতির শিকার হন ক্রেতারা, যা পুরো খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

বর্তমানে, সরকার এবং ই-ক্যাব এই আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে কঠোর পদক্ষেপ নিলেও, এর স্থায়ী সমাধান এখনও সময়ের ব্যাপার। আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স রেগুলেটরি বডি গঠন করা জরুরি। এই বডিটির ক্ষমতা থাকতে হবে অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তি করা এবং অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার। এর পাশাপাশি, একটি জাতীয় ই-কমার্স ডেটা হাব তৈরি করা উচিত, যা বাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে এবং সঠিক ডেটা সরবরাহ করবে।

টেকভয়েস২৪: আপনার দৃষ্টিতে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির বিকাশে কোন বাধা রয়েছে কী? সেগুলো কি কি?
মোহাম্মেদ মোজাম্মেল হক মৃধা:
ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির বিকাশে প্রধান বাধাগুলো হলো-

আস্থার সংকট ও ক্রেতা সুরক্ষা: কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে ক্রেতাদের মধ্যে আস্থার অভাব একটি বড় সমস্যা। ২০২১ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ডিজিটাল কমার্স সেলে প্রায় ১ লাখের বেশি অভিযোগ জমা পড়েছিল, যা এই সংকটের তীব্রতা প্রমাণ করে।

দুর্বল লজিস্টিকস ও সাপ্লাই চেইন: বাংলাদেশের লজিস্টিকস অবকাঠামো এখনও ই-কমার্সের জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। দেশে বর্তমানে ডেলিভারি খরচ প্রায় ৬০ টাকা থেকে ১২০ টাকা, যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা বেশি। বিশেষ করে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে পণ্য পৌঁছাতে অনেক সময় লাগে এবং খরচও বেড়ে যায়।

ডিজিটাল পেমেন্টের সীমাবদ্ধতা: দেশের প্রায় ৯০% ই-কমার্স লেনদেন এখনও ক্যাশ অন ডেলিভারি (সিওডি) নির্ভর। এর ফলে ব্যবসায়ীদের জন্য অতিরিক্ত খরচ ও ঝুঁকির সৃষ্টি হয়।

দক্ষ জনবলের অভাব: ই-কমার্স খাতের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে। বিশেষ করে ডিজিটাল মার্কেটিং, ডেটা অ্যানালাইসিস এবং সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের মতো ক্ষেত্রে।

টেকভয়েস২৪: এই বাধা অতিক্রম করতে আপনার পরামর্শ কী থাকবে?
মোহাম্মেদ মোজাম্মেল হক মৃধা:
এই বাধাগুলো অতিক্রম করতে হলে একটি সুপরিকল্পিত এবং সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। 'এসক্রো' পেমেন্ট সিস্টেমকে বাধ্যতামূলক করা এবং একটি কেন্দ্রীয় অভিযোগ নিষ্পত্তি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। এছাড়াও যেসব উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে সেগুলো হলো-

নীতিমালা ও রেগুলেটরি বডি: সরকারের উচিত ই-কমার্স নীতিমালাকে আরও সহজ এবং কার্যকরী করা। একটি স্বাধীন ডিজিটাল কমার্স রেগুলেটরি কমিশন গঠন করে তার হাতে পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া উচিত, যাতে তারা বাজারের স্বচ্ছতা ও ক্রেতা সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে।

যৌথ লজিস্টিকস প্ল্যাটফর্ম: একটি জাতীয় লজিস্টিকস পুল তৈরি করা যেতে পারে, যা বিভিন্ন ডেলিভারি কোম্পানিকে একটি প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসবে। যেমন, ই-ক্যাব এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো একত্রিত হয়ে একটি যৌথ লজিস্টিকস প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ছোট উদ্যোক্তারা সাশ্রয়ী মূল্যে দ্রুত ডেলিভারি সেবা পাবে। এর ফলে দেশের প্রান্তিক অঞ্চলেও ই-কমার্স সেবা পৌঁছানো সম্ভব হবে।

আস্থার জন্য সার্টিফিকেশন: ই-ক্যাব একটি 'ট্রাস্ট সিল' বা 'সার্টিফিকেশন' প্রোগ্রাম চালু করতে পারে। যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান কঠোর নীতি মেনে চলে, তাদেরকে এই সিল দেওয়া হবে, যা ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জন করতে সাহায্য করবে।

ডিজিটাল পেমেন্টের বিস্তার: বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতায় একটি জাতীয় ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম (যেমন ভারতের ইউপিআই) তৈরি করা যেতে পারে। মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) এবং অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়েগুলোকে আরও সহজ ও নিরাপদ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। অনলাইন লেনদেন উৎসাহিত করতে বিভিন্ন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে ডিসকাউন্ট বা ক্যাশব্যাক অফার করা যেতে পারে। সেসাথে  অনলাইন পেমেন্ট ব্যবহারে প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে।  

প্রশিক্ষণ ও গবেষণা: ই-কমার্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করে এই খাতের ডেটা সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং গবেষণা করা উচিত। এর পাশাপাশি, তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য প্রযুক্তিগত ও ব্যবসায়িক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।

সবশেষে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ই-কমার্স সম্পর্কিত কোর্স চালু করে দক্ষ জনবল তৈরি করা।

টেকভয়েস২৪: দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে যে গবেষণা করা হয় সেটি কি যথেষ্ট? এ বিষয়ে আপনার মতামত কেমন?
মোহাম্মেদ মোজাম্মেল হক মৃধা:
আমার মতে, দেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে যে গবেষণা করা হয় তা মোটেও যথেষ্ট নয়। বর্তমানে যে গবেষণাগুলো হয়, সেগুলো মূলত বিচ্ছিন্ন এবং ডেটার স্বল্পতার কারণে পূর্ণাঙ্গ হয় না। একটি কার্যকর গবেষণার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ডেটা সংগ্রহ এবং গভীর বিশ্লেষণ। যেমন, আমরা জানি না যে দেশের মোট ই-কমার্স লেনদেনের কত শতাংশ মোবাইল কমার্স, কত শতাংশ সোশ্যাল কমার্স এবং কত শতাংশ মার্কেটপ্লেস থেকে আসে। ক্রেতাদের আচরণ, পণ্যের চাহিদা এবং বাজারের প্রবণতা নিয়েও পর্যাপ্ত ডেটা নেই। এই ডেটার অভাবে অনেক নতুন উদ্যোক্তা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন এবং ব্যর্থ হন।

এই সমস্যার সমাধানে একটি জাতীয় 'ই-কমার্স ডেটা হাব' প্রতিষ্ঠা করা জরুরি, যেখানে সব ধরনের ই-কমার্স লেনদেন, ব্যবহারকারী এবং বাজারের তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হবে। এই হাবটি সরকার, ই-ক্যাব এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে পরিচালিত হতে পারে। এর ফলে, নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে যেমন সুবিধা হবে, তেমনি উদ্যোক্তারাও সঠিক তথ্য নিয়ে তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা সাজাতে পারবে।

টেকভয়েস২৪: গত ১২ বছরে ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি কতদূর এগিয়েছে? এই ইন্ডাস্ট্রি কি সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে?
মোহাম্মেদ মোজাম্মেল হক মৃধা:
গত ১২ বছরে (২০১৩-২০২৫) বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি অবিশ্বাস্যভাবে এগিয়ে গেছে। যখন ই-ক্যাব গঠিত হয়, তখন দেশের ই-কমার্স লেনদেন ছিল বছরে মাত্র কয়েক মিলিয়ন ডলার। এখন তা বিলিয়ন ডলারের কোঠায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ডিজিটাল পেমেন্ট ও ই-কমার্স লেনদেন প্রায় ৪০০% বৃদ্ধি পেয়েছে গত পাঁচ বছরে। প্রবৃদ্ধির এই হার নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।

কিন্তু এই ইন্ডাস্ট্রি সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে কি না সেটি বলা কিছুটা জটিল। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ঠিকই। কিন্তু এর ভিত্তি এখনো অনেক দুর্বল। ২০২১-২২ সালের ই-কমার্স কেলেঙ্কারি প্রমাণ করে যে, আমরা প্রবৃদ্ধির পেছনে ছুটেছি। এখনও একটি টেকসই ইকোসিস্টেম তৈরি করতে পারিনি। আস্থার সংকট, দুর্বল নীতিমালা এবং লজিস্টিকসের সীমাবদ্ধতা এখনও আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ। তবে, বর্তমান সরকার এবং বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো এই সমস্যা সমাধানে তৎপর হয়েছে, যা একটি ইতিবাচক লক্ষণ। যদি এই উদ্যোগগুলো সফল হয় এবং আমরা একটি নির্ভরযোগ্য ও ক্রেতাবান্ধব ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে পারি, তবেই বলা যাবে যে আমরা সঠিক পথে এগোচ্ছি।

টেকভয়েস২৪: ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ কি থাকবে?
মোহাম্মেদ মোজাম্মেল হক মৃধা:
ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি আমার পরামর্শগুলো হলো: দ্রুত লাভের পেছনে না ছুটে ক্রেতাদের আস্থা অর্জনে মনোযোগী হন। একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড তৈরি করুন, যেখানে পণ্যের গুণগত মান, সময়মতো ডেলিভারি এবং নির্ভরযোগ্যতা থাকবে। কেবল পণ্য বিক্রি করলে তা দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য দেবে না। তাই ভাবুন আপনি কোন সমস্যার সমাধান করতে পারেন। প্রযুক্তিকে আপনার ব্যবসার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ব্যবহার করুন। ডেটা বিশ্লেষণ করে ক্রেতাদের আচরণ বুঝুন এবং সে অনুযায়ী আপনার কৌশল পরিবর্তন করুন। এবং সবশেষে, মনে রাখবেন একটি সফল ব্যবসা রাতারাতি তৈরি হয় না, এর জন্য কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং ধৈর্য প্রয়োজন।

image

আপনার মতামত দিন