বাজেটের আগেই মোবাইল ফোনের কথা বলায় কর হার বাাড়নোর পরিকল্পনা, বিস্ময় প্রকাশ খাত সংশ্লিষ্টদের

প্রকাশ: সোমবার, ০৬ জানুয়ারি, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪ রিপোর্ট
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
আবারো বাড়ছে মোবাইল ফোনে কথা বলায় সম্পূরক শুল্ক। সূত্রমতে বিদ্যমান শুল্ক হারের ওপর আরো তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো এসআরও জারি হয়নি।

অবশ্য পরিচয় প্রকাশ না করে মোবাইল ফোনে কথা বলা ও সেলুলার ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ ফের বাড়নোর পরিকল্পনার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাদের মতে এই সম্পূরক শুল্কের কল্যাণে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে ১ হাজার কোটি টাকা।

এমনটি হলে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জ মিলিয়ে মোট কর বর্তমান ৩৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকেরা। প্রযুক্তি ব্যবসায়ীরা অন্তবর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, এমনটা করা হলে এবার তারা রাজপথে নামবেন। ধর্মঘটের ডাক দেবেন।

এই পরিকল্পনার প্রতিবাদ জানিয়েয়ে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এনবিআর-এর উপর ফ্যাসিবাদ সরকারের প্রেতাত্মা ভর করেছে বলেই নতুন করে গ্রাহকদের ওপর অনৈতিকভাবে সম্পূরক শুল্ক জারি করতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে জানতে পেরেছি যে, ভয়েস কল এবং ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নতুন করে তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করতে যাচ্ছে এনবিআর। আমরা মনে করি, এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত একমাত্র তারাই নিতে পারে যাদের উপর বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের পেতাত্মা ভর করে আছে। ইন্টারনেট সবাই আমরা বিশ্বের মধ্যে তলানিতে আছি। অন্যদিকে ভ্যাটের ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে। যেখানে দেশের এখনো ৪৮ শতাংশ জনগণ ইন্টারনেট সেবার বাইরে আছে সেখানে নতুন করে এই উচ্চ কর হার নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা থেকে বিমুখ করবে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। জুলাই আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবে হাজার হাজার প্রাণ দিয়েছিল জবাবদিহিতা গণতন্ত্র ও সেবামূলক কমবে বলে। কিন্তু বর্তমান সরকার এবং এনবিআর সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি ভুলে গিয়ে রাষ্ট্রের অর্থ যোগানোর জন্য জনগণের পকেট কাটার যে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অযৌক্তিক এবং ফ্যাসিবাদীমূলক আচরণ। এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে তাদেরকে সরে আসতে হবে, তা না হলে আমরা গ্রাহক সমাজ, নাগরিক সমাজ এবং সকল দলমত নির্বিশেষে রাজপথে নামতে বাধ্য হব।

রবি’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, এটা এনবিআরএর একটি রুটিন অনুশীলন। এই অপারেটররা কর ফাঁকি দেয় না বলেই রাজস্বের নিশ্চয়তায় তাদের ওপর চাপ দেওয়া হয়। অন্য কোনো খাত এত সহজে রাজস্ব দিতে পারে না।

রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বাজেটের এত আগেই এ সিদ্ধান্ত ব্যতিক্রম উল্লেখ করে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। এটি মোটেই বাড়ানো উচিত নয়।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান মনে করেন, শুল্ক বাড়ালে মানুষ মোবাইলে কথা বলা কমাতে পারে এবং এতে রাজস্ব আরও কমে যেতে পারে।

মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি ১০০ টাকার রিচার্জ বা ইন্টারনেট খরচের বিপরীতে গ্রাহককে কর হিসেবে ৩৯ টাকা দিতে হয়। অর্থাৎ গ্রাহক ব্যবহার করতে পারেন ৬১ টাকা। নতুন করহার কার্যকর হলে প্রতি ১০০ টাকায় কর বাবদ কেটে রাখা হবে ৪২ টাকা, আর ব্যবহারযোগ্য টাকা কমে দাঁড়াবে ৫৮ টাকায়।
image

আপনার মতামত দিন