রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে সৃষ্ট বৈশ্বিক বাণিজ্য অস্থিতিশীলতা, অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও অসাধারণ ব্যবসায়িক সাফল্য দেখাচ্ছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজমেন্টের দৃঢ় পদক্ষেপ এবং সময়োপযোগি কৌশলগত পরিকল্পনার ফলে কোম্পানির মুনাফা, বিক্রয়, ইপিএস, এনএভি, অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোসহ অন্যান্য আর্থিক সূচকে উন্নতির ধারা বজায় রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫-২৬ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২৫) কোম্পানিটির কর পরবর্তী নিট মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ৪৮ শতাংশ বেশি বা ৭১.৮৬ কোটি টাকা বেড়ে ২২১ কোটি টাকা হয়েছে।
ওয়ালটন হাই-টেকের চলতি হিসাব বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত সময়ের প্রকাশিত প্রথম প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
বুধবার (১২ নভেম্বর) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৪৮তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।
প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ হিসাব বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে, অর্থাৎ প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২২০.৮৯ কোটি টাকা। যেখানে আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা হয়েছিল ১৪৯.০৩ কোটি টাকা। সেই হিসাবে জুলাই- সেপ্টেম্বর’২০২৫ সময়ে কোম্পানির মুনাফা প্রায় ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। মুনাফার এই অসাধারণ প্রবৃদ্ধি অর্জনের প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির বিক্রয়ের পরিমাণ আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯.৪৬ শতাংশ বা ২৩৬.৩৫ কোটি টাকা বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক ব্যয় উল্লেখযোগ্যহারে হ্রাস পেয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ওয়ালটনের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.২৯ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিলো ৪.৯২ টাকা। ৩০ সেপ্টেম্বর কোম্পানির শেয়ার প্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) পুনর্মূল্যায়ন ব্যতীত ২৯৫.৬৭ টাকা এবং পুনর্মূল্যায়নসহ ৪০৭.০৪ টাকায় উন্নীত হয়েছে।
চলতি হিসাব বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সমাপ্ত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি নিট অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪.৭৯ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৩.৯২ টাকা টাকা। অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো’র এই অসাধারণ উন্নতির প্রধান কারণ- আলোচ্য সময়ে ক্রেতাদের থেকে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১২৪.৭৫ কোটি টাকা বেশি আদায় হওয়ার পাশাপাশি কাঁচামাল ও অন্যান্য সরবরাহকারীদের অর্থ প্রদানের পরিমাণ ৩২৪.৫১ কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থ রবছরের প্রথম প্রান্তিকে রেফ্রিজারেটর এবং এয়ার কিন্ডিশনারের উপর ভ্যাট ৭.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ এবং লিফটের ক্ষেত্রে ভ্যাট শূন্য থেকে বাড়িয়ে পাঁচ শতাংশ করার প্রেক্ষিতে ভ্যাট প্রদানের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
চলতি হিসাব বছরের আগামী প্রান্তিকগুলোতেও কোম্পানির বিক্রয়, মুনাফাসহ অন্যান্য আর্থিক সূচকের উন্নতির ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন কোম্পানির ম্যানেজমেন্ট।