‘একই কোম্পানিকে সব লেয়ারে লাইসেন্স দেওয়া কোনো ভাবেই উচিত নয়’

প্রকাশ: রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪ রিপোর্ট
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিটিআরসিতে রাজনৈতিক নিয়োগে ব্যবসায়ীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মন্তব্য করে আইএসপিএবির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক বলেছেন, ‘বিটিআরসিতে যারা ছিলেন (ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী শাসনামলে) তারা রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ছিলেন। তারা রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্টদের সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে আমরা ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘যেসব কোম্পানির ভিন্ন ভিন্ন প্রায় সবকটি লেয়ারে লাইসেন্স ছিল, তারা প্রতিযোগীদের প্রতিযোগিতা খর্ব করেছে। একই কোম্পানিকে সব লেয়ারে লাইসেন্স দেওয়া কোনো ভাবেই উচিত নয়। এতে মিডিয়াম ও ছোট অপারেটররা ব্যবসা করতে পারে না।’

 মোবাইল অপারেটরদের আইএসপি লাইসেন্স দেওয়া হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দেশে  সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন ও টিপ্যাপ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা খাতে সংস্কার এর প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে খাতসংশ্লিষ্টরা বক্তব্য দেন।
 
ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের   সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট আইসিটি ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক বলেন, ‘এখন আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মোবাইল অপারেটররা ফিক্সড ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় আসতে চাচ্ছে। আমরা শুনেছি একটি অপারেটর আইএসপি লাইসেন্সের জন্যে আবেদন করেছে। এটি কোনোভাবেই উচিত হবে না। আমরা আইএসপি অপারেটররা তা মেনে নেব না। আমরা চাইব না এই লেয়ারে তারা ব্যবসা করুক। তাহলে আমাদের ব্যবসাই থাকবে না। বরং বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে আইএসপি এমভিএনও হয়ে মোবাইল সার্ভিস দেয়। সরকার এটি নিয়ে ভাবতে পারে।’
 
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে তিন হাজার আইএসপি লাইসেন্স আছে। এই ব্যবসার মাধ্যমে ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ খাতে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। আমরা আইএসপিকে সোস্যাল ব্যবসার পর্যায়ে নিয়ে গেছি। এতোটা স্বল্পমূল্যে বিশ্বের আর কোথাও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা দেওয়া হয় না। মাত্র ৫০০ টাকায় আমরা আনলিমিটেড ও গুড কোয়ালিটির ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছি।’

বিটিআরসিতে রাজনৈতিক নিয়োগ বন্ধ করা উচিত এবং যারা বিটিআরসিতে চাকরি করবেন তাদের সবক্ষেত্রেই নিরপেক্ষ থাকা উচিত বলেও মন্তব্য করেন আইএসপিএবিএ’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক।

অনুষ্ঠানে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। আইসিটি সেক্টরে হওয়া দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত। প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেট সহজলভ্য করে দিতে হবে। সে ধরণের পলিসি ঠিক করতে হবে রাজনীতিবিদদের। এ সময় বিটিআরসির প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন ইশরাক।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলিকম বিশেষজ্ঞ মুস্তাফা মাহমুদ হুসাইন। এতে আরও বক্তব্য দেন বেসিসের সাবেক সভাপতি ও বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইআইজিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসের, রবি’র সিনিয়র ডিরেক্টর অনামিকা ভক্ত, গ্রামীণফোনের হোসেন সাদাত, এমটবের হেড অব কমিউনিকেশন আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।

আপনার মতামত দিন