সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
কোনো কিছু দেখে যাচাই-বাছাই না করে শিক্ষার্থীদের কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহ্বান
জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, কোটা আন্দোলনকারী
শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার ফলে সারা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ও প্রাণহানির
মতো ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দায়ী বলে তিনি জানান।
বুধবার রাজধানীর আমারি
হোটেলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ইইউ প্রতিনিধি টিম এর যৌথ উদ্যোগে সাইবার-নিরাপত্তা
বাড়ানোর জন্য বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা, কৌশল এবং ভবিষ্যৎ দিক-নির্দেশনা নিয়ে ‘সাইবার-সিকিউরিটি
সিম্পোজিয়াম: বাংলাদেশ'স পাথ ফরওয়ার্ড’
বিষয়ক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা
মানুষের মুক্ত বাক স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আমরা সকলের বক্তব্য, মন্তব্য ও আবেগ-অনুভূতির
প্রতি শ্রদ্ধাশীল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়ে
খুবই উদ্বিগ্ন। শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই বিবেচনা করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিমন্ত্রী
বা সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে নয়, একজন বাবা এবং সচেতন মানুষ হিসেবে সকলের প্রতি অনুরোধ
করবো, আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন ধৈর্যশীল ও সহনশীল হয় এবং সবার আগে আমাদের নাগরিক ও
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বর্তমান এই অবস্থায় তৃতীয় কোন পক্ষ যেন
শিক্ষার্থীদেরকে বিভ্রান্ত করতে ও সুযোগ নিতে না পারে। একইসাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় কোন
ভুল তথ্য, গুজব বা অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা যেন অসহনশীল হয়ে না যায়।
সেমিনারে পলক বলেন, বর্তমান
বিশ্বে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত সকল ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য সাইবার নিরাপত্তার
সমপরিমাণ ঝুঁকি রয়েছে। আমরা কেউই সাইবার সিকিউরিটির বিষয়ে শতভাগ নিরাপদ নয়। কারণ, ইন্টারনেটের
সর্বত্রই আমাদের ফুটপ্রিন্ট ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সরবরাহ করা আছে। তাই, সাইবার সিকিউরিটি
এখন কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা দেশের ইস্যু নয়, সাইবার সিকিউরিটি একটা গ্লোবাল
ইস্যু।
তিনি সারাবিশ্বের ইন্টারনেট
ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ সাইবার জগৎ নিশ্চিত করতে সরকার, প্রাইভেট সেক্টর, অ্যাকাডেমিয়া
ও মিডিয়ার সমন্বয়ে যৌথভাবে সচেতনতা তৈরি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একইসাথে ডিজিটাল
লিটারেসি ও এআই লিটারেসি নিয়েও আমাদের সচেতনতা তৈরি করতে হবে। কারণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য
ও বাণিজ্যসহ এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে।
তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক
৪র্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে অর্থ এখন আর মুখ্য বিষয় নয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন,
এখন প্রধান বিষয় হচ্ছে ডেটা। তাই আমাদের প্রধান দায়িত্ব হবে আমাদের দেশ, সরকার ও নাগরিকের
তথ্য উপাত্তের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা। আমাদের ভবিষ্যৎ ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটা
নিরাপদ সাইবার জগৎ নিশ্চিত করতে প্রয়োজন হবে সরকার, প্রাইভেট সেক্টর, অ্যাকাডেমিয়া
এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের পার্টনারশিপ ও পারস্পরিক সহযোগিতা।