জরুরি ভিত্তিতে এনইআইআর বাস্তবায়ন সময়ের দাবি

প্রকাশ: রবিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png নিজস্ব প্রতিবেদক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে নিরাপত্তা জোরদার, বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধন ব্যবস্থা এনইআইআর (NEIR) চালু করাকে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও জরুরি উদ্যোগ হিসেবে বিবেচনা করছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।

সংস্থাটির মতে, এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে অবৈধ হ্যান্ডসেট প্রবেশ কমবে এবং গ্রাহক সুরক্ষা আরও শক্তিশালী হবে।

রবিবার (৯ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ এই ব্যবস্থার দ্রুত ও কার্যকর বাস্তবায়নের দাবি জানান।

বিবৃতিতে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে মোবাইল ফোন শুধু যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রা সফল করতে হলে টেলিযোগাযোগ খাতে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা অপরিহার্য।’

এনইআইআর (National Equipment Identity Register) হলো একটি জাতীয় ডাটাবেস, যেখানে দেশে ব্যবহৃত প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই (IMEI) নম্বর নিবন্ধিত থাকে। এর মাধ্যমে বৈধ এবং অবৈধ (চোরাই, নকল বা কালোবাজারি) ফোনের মধ্যে পার্থক্য করা সম্ভব হয়।

এনইআইআর (NEIR) বাস্তবায়নের গুরুত্ব বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন এই ব্যবস্থা চালুর পক্ষে ৬টি প্রধান কারণ তুলে ধরেছে:

১. অবৈধ ফোন নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক অবৈধভাবে আমদানি করা ও চোরাই ফোন বাজারে আসে। এনইআইআর (NEIR) বাস্তবায়নের মাধ্যমে অবৈধ আইএমইআই নম্বরযুক্ত ফোন নেটওয়ার্কে সংযোগ পাবে না, ফলে এসব ফোনের রমরমা বাজার বন্ধ হয়ে যাবে।

২. সরকারি রাজস্ব সুরক্ষা: শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে আনা ফোন ব্যবহার বন্ধ হলে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে। এটি বৈধ আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদেরও সুরক্ষা দেবে।

৩. ভোক্তা সুরক্ষা: এই ব্যবস্থা চালুর ফলে নিম্নমানের, নকল ও ‘রিফারবিশড’ হ্যান্ডসেট বাজার থেকে বাদ যাবে। ফলে ব্যবহারকারীরা মানসম্পন্ন ও নিরাপদ ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন।

৪. চুরি হওয়া ফোন ব্লক করা: চুরি বা হারিয়ে যাওয়া ফোনের আইএমইআই নম্বর এনইআইআর (NEIR) সিস্টেমে ব্লক করা যাবে, ফলে সেটি কোনো নেটওয়ার্কে কাজ করবে না। এটি ফোন চুরি নিরুৎসাহিত করবে।

৫. জাতীয় নিরাপত্তা: অচিহ্নিত বা অবৈধ ডিভাইস প্রায়ই অপরাধমূলক কার্যক্রমে ব্যবহৃত হয়। এনইআইআর (NEIR)-এর মাধ্যমে প্রতিটি হ্যান্ডসেটের পরিচয় জানা থাকলে সন্ত্রাস, প্রতারণা ও সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব।

৬. নেটওয়ার্কের মানোন্নয়ন: অবৈধ ও নকল ফোন প্রায়ই নেটওয়ার্কে সিগন্যাল বিঘ্নিত করে। শুধু বৈধ হ্যান্ডসেট ব্যবহারে নেটওয়ার্ক স্থিতিশীলতা ও সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।

সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এনইআইআর (NEIR) বাস্তবায়ন কেবল একটি প্রযুক্তিগত উদ্যোগ নয়, এটি রাজস্ব সুরক্ষা, ভোক্তা নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থ রক্ষার এক কৌশলগত পদক্ষেপ।’

তিনি এই ব্যবস্থা বাস্তবায়নে জনগণকে সচেতন করা, নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সহজ করা এবং মোবাইল অপারেটরদের সাথে সমন্বয় জোরদারের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

image

আপনার মতামত দিন