টেলিটকের প্রতি ‘প্রযুক্তিগত বৈষম্য’ বন্ধের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে টেলিটকের জন্য ৭০০ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম ব্যান্ড বরাদ্দের দাবি এবং বৈষম্যমূলক নীতির প্রতিবাদ জানানো হয়।
মানববন্ধনে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তরঙ্গ নিলামের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থী।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘একটির পর একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। নতুন সরকারের সিদ্ধান্তেও টেলিটককে বিলুপ্ত করার পথ তৈরি হচ্ছে। আমরা চাই সরকার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে টেলিটকের জন্য ৭০০ ব্যান্ড বরাদ্দ করুক।’

প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ আবু নাসির বলেন, ‘প্রযুক্তির উন্নয়নের বিপক্ষে তারা নন। তবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে স্পেকট্রাম বরাদ্দের সিদ্ধান্ত প্রতিযোগিতা নষ্ট করবে। তিনি জানান, ‘বর্তমানে একটি অপারেটর একাই নব্বই শতাংশ লাভ করছে, আরেকটি আট শতাংশ। বাকিরা লোকসানে। এর মধ্যে টেলিটককে পেছনে ফেলে দেওয়া হলে বাজারে একচেটিয়া অবস্থা তৈরি হবে।’
সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘টেলিটকের জন্য ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড বরাদ্দ দেওয়া জরুরি।বিটিআরসির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে টেলিটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড আন্তর্জাতিকভাবে ‘গোল্ডেন ব্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত হলেও নিলামে টেলিটকের জন্য বরাদ্দ না রাখার প্রস্তাব উঠেছে, যা রাষ্ট্রীয় স্বার্থবিরোধী।’

সভাপতি বলেন, ‘কম বিনিয়োগে দেশের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী সেবা দিয়েছে টেলিটক। কলচার্জ কমানো থেকে শুরু করে প্রথম অনলাইন ভর্তি ও ই-সেবার প্রসারে রাষ্ট্রীয় অপারেটরটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এই ব্যান্ড না পেলে গ্রামীণ জনগণ মানসম্মত সেবা থেকে বঞ্চিত হবে, স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে এবং বাজারে বিদেশি অপারেটরদের একচেটিয়া সুবিধা তৈরি হবে।’
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ৭০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ড ছাড়া টেলিটকের ভবিষ্যৎ নিশ্চিতভাবে বিপন্ন। এটি কার্যত টেলিটকের মৃত্যুপরোয়ানা। তারা দাবি করেন, নেটওয়ার্ক কভারেজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সরকারি সেবা চলমান রাখা এবং বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে টেলিটকের জন্য এই ব্যান্ড বরাদ্দ অত্যাবশ্যক।
এ সময় বক্তব্য দেন মানবাধিকার কর্মী সাধনা মহল, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, বাংলাদেশ মোবাইলফোন রিচার্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম, গ্রীন পার্টির চেয়ারম্যান রাজু খানসহ আরও অনেকে।