অবৈধ মোবাইলের দৌরাত্ম্য: বিনিয়োগ ও রাজস্বে কোটি টাকার ক্ষতি

প্রকাশ: বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png নিজস্ব প্রতিবেদক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

দেশের মোবাইল বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশই অবৈধ মার্কেটের দখলে। ফলে বৈধভাবে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোর হাজার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। একই সঙ্গে সরকার প্রতিবছর প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।

মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানায়। সংগঠনের সভাপতি জাকারিয়া শহিদ ও সহ-সভাপতি রেজওয়ানুল হকসহ অন্যান্য নেতৃবন্দ এ সময় বক্তব্য দেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আমদানির পাশাপাশি বাংলাদেশে ২০১৭ সালে মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে দেশি-বিদেশি মিলে প্রায় ১৭টি মোবাইল ফোন কারখানা দেশে উৎপাদন করছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছে এবং এক লাখের বেশি মানুষ এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে।

দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোন এখন কেবল স্থানীয় বাজারেই নয়, ভবিষ্যতে বিদেশেও রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি করছে। এর মাধ্যমে দেশে নতুন বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। মোবাইল ফোন উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্যাকেজিং, প্রিন্টিং, ব্যাটারি, চার্জার, হেডফোন ও ডাটা কেবলসহ বিভিন্ন কম্পোনেন্ট শিল্প। এখানে কমপক্ষে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে এবং ৫০–৬০ হাজার মানুষ কর্মরত।

সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশের অনুমোদিত মোবাইল ফোন বিক্রেতা প্রায় ২০ হাজার, যেখানে প্রায় ৮০ হাজার কর্মী সরাসরি যুক্ত। উৎপাদন ও বিতরণ পর্যায়ে মোট এক লাখ ৬০ হাজার মানুষ সরাসরি এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। গড়ে প্রতিটি পরিবারের পাঁচ সদস্য হিসেবে ধরা হলে, কমপক্ষে আট লাখ মানুষ বৈধ মোবাইল শিল্পের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দীর্ঘদিন ধরে বৈধ শিল্পের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অবৈধ বা গ্রে হ্যান্ডসেট। এতে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয় এবং বৈধ কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ ঝুঁকিতে পড়ে। অবৈধ ফোন ব্যবহার করে আর্থিক প্রতারণাসহ নানা অপরাধ ঘটছে, যার প্রকৃত অপরাধীকে খুঁজে বের করা যায় না।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) চালু করবে। এর মাধ্যমে অবৈধভাবে আমদানিকৃত বা নিবন্ধনবিহীন ফোন ব্যবহার করা যাবে না। এই উদ্যোগ সরকারের রাজস্ব আয় নিশ্চিত করবে, বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনবে এবং ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষিত রাখবে। সংগঠনটি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

image

আপনার মতামত দিন