তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোপন নথি ডার্ক ওয়েবে ফাঁস  

প্রকাশ: শনিবার, ০৯ অগাস্ট, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

তাইওয়ানের জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে সম্প্রতি গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু গোপন নথি ডার্ক ওয়েবে বিক্রির আশঙ্কা প্রকাশ পাওয়ার পর সরকার এক উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। পাশাপাশি, বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি-এর কাছ থেকেও গোপন প্রযুক্তি চুরির অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসব ঘটনা তাইওয়ানের কৌশলগত অবকাঠামো এবং সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাকে সামনে এনে দিয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য ফাঁস: তদন্তে নামছে সরকার
 শুক্রবার (৮ আগস্ট) তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের কিছু গোপন নথি ২০২৪ সালের তথ্য হতে পারে, যা ডার্ক ওয়েবে পোস্ট করার আগে পরিবর্তিত বা সম্পাদিত হতে পারে বলেও সন্দেহ করা হচ্ছে। এসব তথ্য কীভাবে ফাঁস হলো এবং কার মাধ্যমে তা বাইরে গেল, তা জানার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিন ছিয়া-লুং একটি তদন্ত টিম গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন।

বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, তদন্তে কোনো কর্মচারীর সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ের আইটি সিস্টেম ও নিরাপত্তা পরিকাঠামো পুনর্মূল্যায়ন ও শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনা জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত তথ্যরক্ষায় সরকার কতটা প্রস্তুত-সে প্রশ্ন এখন জনমাধ্যমে তোলপাড় তুলেছে।

প্রযুক্তি জগতেও নিরাপত্তা সংকট: টিএসএমসি থেকে গোপন তথ্য চুরির অভিযোগ
এদিকে, তাইওয়ানের গর্ব টিএসএমসি, যা বিশ্বজুড়ে চিপ নির্মাণের জন্য পরিচিত, সেখান থেকেও গোপন কোর প্রযুক্তি চুরির ঘটনায় নতুন করে নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। 

ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান কর্মচারী অবৈধভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

তাইওয়ানের প্রসিকিউশন টিম ২৫ থেকে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে ছয়জন সন্দেহভাজনের বাড়িতে অভিযান চালায় এবং তাঁদের মধ্যে দুজন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, একজন পরে ছাড়া পেয়েছেন। এখনো তদন্ত চলছে এবং চুরি হওয়া তথ্য অন্য কোনো দেশের হাতে পৌঁছেছে কি না, তা নির্ধারণ করাই এখন প্রধান লক্ষ্য।

এই ঘটনা শুধুমাত্র তাইওয়ানের প্রযুক্তি শিল্প নয়, বরং গ্লোবাল টেক ইন্ডাস্ট্রির জন্যও এক বড় সতর্ক সংকেত হয়ে উঠেছে।
 
নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নাকি বিদেশি হস্তক্ষেপ?
সাম্প্রতিক এই দুটি ঘটনা তাইওয়ানের রাষ্ট্রীয় ও প্রযুক্তিগত অবকাঠামোর সাইবার ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা প্রকাশ করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ঘটনাগুলো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা কিংবা প্রতিযোগী দেশের পরিকল্পিত হামলার অংশও হতে পারে। তাই সরকারকে এখন কেবল তদন্তেই সীমাবদ্ধ না থেকে, দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা কৌশল গ্রহণ করতে হবে।  সূত্র: রয়টার্স, ব্লুমবার্গ, ফোকাস টাইওয়ান।

image

আপনার মতামত দিন