আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিবছরের মতো এবারও অক্টোবর ও নভেম্বর মাসজুড়ে রিটার্ন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলে। করদাতারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন এবং আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শ নিচ্ছেন। মনে রাখা জরুরি, চলতি অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রয়েছে।
এবার দেখা যাক, কোন ধরনের করদাতাদের জন্য করমুক্ত সীমা কত। দেখে নিন, আপনি কোন শ্রেণিতে আছেন:
১. সাধারণ করদাতা
সাধারণ করদাতাদের জন্য আগের মতোই বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা রাখা হয়েছে। এর মানে হলো, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত আপনার আয় যদি সাড়ে তিন লাখ টাকা পেরিয়ে যায়, তাহলে আপনাকে কর দিতে হবে।
২. নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতা
নারী ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতার জন্য করমুক্ত আয়সীমা চার লাখ টাকা করা হয়েছে।
৩. তৃতীয় লিঙ্গের করদাতা ও প্রতিদ্বন্দ্বী করদাতা
এই শ্রেণির করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা হলো ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
৪. গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা
৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় থাকলে কর দিতে হবে গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের।
৫. প্রতিবন্ধী সন্তানদের পিতা-মাতা
কারও প্রতিদ্বন্দ্বী সন্তান থাকলে পিতা-মাতা করদাতা হলে নিয়মিত করমুক্ত আয়সীমার পরও বাড়তি ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় পাবেন। এই ছাড় দেওয়া প্রতিদ্বন্দ্বী সন্তানের ভরণপোষণের জন্য। তবে পিতা ও মাতা দুজন করদাতা হলে যেকোনো একজন করছাড়ের সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া আইনানুগ অভিভাবক করদাতা হলেও বাড়তি ৫০ হাজার টাকা ছাড় পাবেন।
কত কর
প্রথম সাড়ে ৩ লাখ টাকার পর প্রথম ১ লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ ও পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২৫ শতাংশ এবং বাকি অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর বসবে।
নতুন করদাতার ন্যূনতম কর ১০০০ টাকা
নতুন করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। করমুক্ত আয়সীমা পার হলেই এক হাজার টাকা কর দিতে হবে। বর্তমানে ঢাকা উত্তর সিটি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি এলাকায় অবস্থিত করদাতার জন্য ন্যূনতম কর পাঁচ হাজার টাকা, অন্য সিটির করদাতার জন্য চার হাজার টাকা এবং সিটি করপোরেশন ব্যতীত অন্য এলাকার করদাতার জন্য তিন হাজার টাকা দিতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ১ কোটি ১৫ লাখের মতো কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএনধারী) আছেন। চলতি অর্থবছরে প্রায় ৪০ লাখ করদাতা রিটার্ন দিয়েছেন।