ব্যবসায় বাধ্যতামূলক হচ্ছে ভ্যাট স্মার্ট চালান

প্রকাশ: সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪ রিপোর্ট
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
আগামী জুলাই থেকে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টারের (ইসিআর) পরিবর্তে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ১০ হাজারের অধিক ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক ভাবে ভ্যাট ফাঁকি রোধে রাজধানী ঢাকাসহ সিটি করপোরেশন এলাকা ও জেলা শহরের ২৭ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বা ভ্যাট স্মার্ট চালান ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এর মধ্যে রয়েছে আবাসিক হোটেল, সামাজিক ও খেলাধুলাবিষয়ক ক্লাব, রেস্তোরাঁ ও ফাস্টফুড শপ, তৈরি পোশাক বিপণন, ডেকোরেটরস ও ক্যাটারার্স, ইলেকট্রনিক/ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালী সামগ্রী বিক্রয়কেন্দ্র, বিজ্ঞাপনী সংস্থা, শপিং সেন্টার/মল/মার্কেটের সকল ব্যবসায়ী, ছাপাখানা ও বাঁধাই সংস্থা, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, কমিউনিটি সেন্টার, ডিপার্টমেন্টাল ফার্মেসী (দেশে উৎপাদিত ওষুধ ব্যতীত), মিষ্টান্ন ভাণ্ডার, জেনারেল স্টোর/সুপারশপ এবং স্বর্ণকার, রৌপ্যকার ও স্বর্ণের দোকানদার।

এছাড়া বড় ও মাঝারি (পাইকারী ও খুচরা) ব্যবসায়ী, আসবাবপত্রের বিপণন কেন্দ্র, যান্ত্রিক লন্ড্রি, কুরিয়ার ও এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিস, সিনেমা হল, বিউটি পার্লার, সিকিউরিটি সার্ভিস, হেলথ ক্লাব ও ফিটনেস সেন্টার, কোচিং সেন্টার, ভিসা প্রসেসিং/অনলাইন অ্যাডমিশন প্রসেসিং সেন্টার এবং ভ্যাটের আওতাভুক্ত অন্যান্য পণ্য ও সেবা ব্যবসায় ইএফডি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প কর্মকর্তারা মনে করেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো গেলে ভ্যাট ফাঁকি বন্ধ হবে। এখন ইসিআর মেশিন টেম্পারিং করা যায়; কিন্তু ইএফডি মেশিনে সে সুযোগ নেই। কারণ ইএফডি মেশিনে বেচাকেনার সব তথ্য সরাসরি ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পে রক্ষিত সার্ভারে জমা হবে। কেউ টেম্পারিং করতে চাইলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সে তথ্য কর্মকর্তারা দেখতে পারবেন। সর্বত্র ইএফডি মেশিন বসানো গেলে ভ্যাট আদায়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে।
 
এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইএফডি/এসডিসি/পিকেআই পিওএস সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে। এতে ভ্যাট ফাঁকির সুযোগ কমবে এবং সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে। ভ্যাট ফাঁকি প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা বা আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

একাধিকবার এ ধরনের অপরাধ করলে প্রতিষ্ঠান বন্ধের হুমকিতেও পড়তে হতে পারে। তাই দণ্ড ও অন্যান্য আইনি প্রয়োগ এড়াতে ভ্যাটযোগ্য পণ্যের সব ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে জরুরিভিত্তিতে ইএফডি/এসডিসি/পিকেআই পিওএস সফটওয়্যার ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অনিয়ম ও রাজস্ব ফাঁকিতে সম্পৃক্ত ও সক্রিয় সকল সফটওয়্যার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কমিশনাররা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানিয়েছে এনবিআর।

২০২০ সালের ২৫ আগস্ট ৫টি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটে (ঢাকা উত্তর/দক্ষিণ/পূর্ব/পশ্চিম, চট্টগ্রাম) ইএফডি স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর খুচরা ব্যবসায় ভ্যাট সংগ্রহে ইএফডি মেশিন স্থাপনে গতি আনতে জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করে এনবিআর।

২০২৩ সালের ২২ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করে জেনেক্স। লক্ষ্য ছিল প্রায় ২৫ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণ ও সঠিকভাবে ভ্যাট আদায় করা। তবে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় এবার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে ইএফডি মেশিন ব্যবহার না করে তাহলে শাস্তির বিধান রয়েছে। ভ্যাট আইনের ৩৭ ধারা অনুযায়ী, ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের অর্ধেক বা সমপরিমাণ অর্থদণ্ড আরোপ করা হবে। এছাড়া অনূন্য ২০ হাজার টাকা এবং অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হবে।
image

আপনার মতামত দিন