মাত্র ২৩ বছর বয়সে আমাজন ও মাইক্রোসফটের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টে চাকরি ছেড়ে স্টার্টআপ গড়েছেন দুই তরুণ প্রকৌশলী রোহান বশিষ্ঠ ও ফারাজ সিদ্দিকী। তাদের প্রতিষ্ঠিত স্টার্টআপ ব্লুজে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি মহলে।
বিজনেস ইনসাইডার-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সানফ্রান্সিসকোভিত্তিক এই এআই কোম্পানি মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই সিড ফান্ডিংয়ে ৪ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৪৩ কোটি টাকা) সংগ্রহ করেছে।
কী করে ব্লুজে?
ব্লুজে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যা এআই ভয়েস ও টেক্সট এজেন্টগুলোর কার্যকারিতা পরীক্ষা করে। একে সহজভাবে বলা যায়, এটি কৃত্রিম গ্রাহকের মতো আচরণ করে, এবং এআই সিস্টেমের দুর্বল জায়গাগুলো শনাক্ত করে।
প্ল্যাটফর্মটি বিভিন্ন ধরনের উচ্চারণ, ভাষা, পটভূমির শব্দ ও ব্যক্তিত্বের বৈচিত্র্য অনুকরণ করতে পারে। ফলে বাস্তবে এক মাসের গ্রাহক ইন্টারঅ্যাকশন যেখানে সময় নেয়, তা তারা মিনিটের মধ্যেই পরীক্ষা করে ফেলতে পারে।
এই প্রযুক্তি গ্রাহকসেবা-নির্ভর কোম্পানিগুলোকে তাদের এআই ব্যবস্থার ত্রুটি দ্রুত ধরতে এবং উন্নত করতে সাহায্য করে।
প্রতিযোগিতার ভিড়ে ব্লুজের আলাদা অবস্থান
এআই টেস্টিং মার্কেটে ইতিমধ্যে ব্রেইনট্রাস্ট, অ্যারাইজ এআই এবং গ্যালিলিও-র মতো প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রযুক্তির গভীরতা এবং দলের ভিশন, এই দুই দিক দিয়েই ব্লুজে ব্যতিক্রম। নতুন অর্থায়নের মাধ্যমে তারা এখন টিম সম্প্রসারণে মনোযোগ দিচ্ছে। পরিকল্পনা রয়েছে নতুন ডেভেলপার, গবেষক ও সেলস স্পেশালিস্ট নিয়োগের।
কে বিনিয়োগ করেছে?
ব্লুজের ৪ মিলিয়ন ডলারের সিড ফান্ডিং রাউন্ডে নেতৃত্ব দিয়েছে ফ্লাডগেট। অংশ নিয়েছে ওয়াই কম্বিনেটর, পিক ফিফটিন, হোমব্রিউ এবং শীর্ষস্থানীয় এআই খাতের কয়েকজন প্রভাবশালী নির্বাহী।
চাকরি ছেড়ে ঝুঁকির পথে
রোহান বশিষ্ঠের ভাষায়, “কলেজ থেকে বেরিয়ে প্রথম চাকরিতে যোগ দেওয়ার পরই বুঝতে পারি, এআই প্রযুক্তি খুব দ্রুত এগোচ্ছে। এটা শিখতে আমাকে ছয় বছর অপেক্ষা করতে হবে না, বরং কাজ শুরু করলেই অনেক কিছু শেখা সম্ভব।”
এই মানসিকতা থেকেই চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্ত। এরপর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফারাজ সিদ্দিকীর সঙ্গে মিলে শুরু হয় ব্লুজের যাত্রা। তাদের লক্ষ্য, এআই গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি ‘বিশ্বাসযোগ্য স্তর’ তৈরি করা।
তাদের মতে, ভবিষ্যতে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই গ্রাহকসেবার ক্ষেত্রে এআই এজেন্টের ওপর নির্ভর করবে। সেই প্রেক্ষাপটে ব্লুজে হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক।
রোহান ও ফারাজের এই উদ্যোগ তরুণ প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম। সাহস, দূরদৃষ্টি আর উদ্ভাবনী শক্তি থাকলে যে বয়স কোনো বাধা নয়, ব্লুজে তার বাস্তব উদাহরণ। সূত্র: দ্য ইকনোমিক টাইমস