ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের এআই-ভিত্তিক ক্রেডিট স্কোরিং ঋণ বিতরণ করলো প্রিয়শপ ও কমিউনিটি ব্যাংক

প্রকাশ: শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png নিজস্ব প্রতিবেদক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এমএসএমই) জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর বিকল্প ক্রেডিট স্কোরিং ঋণ বিতরণ করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বি-টু-বি স্মার্ট ডিস্ট্রিবিউশন প্ল্যাটফর্ম প্রিয়শপ এবং কমিউনিটি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।

সম্প্রতি রাজধানীর এক পাচঁ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রিয়শপের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আশিকুল আলম খান; প্রিয়শপের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিএমও দীপ্তি মন্ডল, কমিউনিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) কিমিয়া সাদাত এবং উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

এই অত্যাধুনিক উদ্যোগ দেশের ৫০ লাখ অবহেলিত মুদি দোকানিদের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করছে, যা ছোট খুচরা ব্যবসায়ীদের কর্মক্ষম মূলধনে সহজ, দ্রুত এবং আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবেশাধিকার প্রদানের মাধ্যমে ক্ষমতায়িত করছে।

নতুন এই মডেলের মাধ্যমে সহজ ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলে তারা ১ থেকে ৩ মাস মেয়াদের স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিতে পারবেন। খুচরা ব্যবসায়ীদের  ঋণ অনুমোদনের জন্য ব্যবহৃত হবে- গ্রাহকের ডেমোগ্রাফিক তথ্য, ক্রয় ইতিহাস, সাইকোমেট্রিক প্রোফাইল, আচরণগত বিশ্লেষণসহ বেশ কিছু বিষয়। এর ফলে তাৎক্ষণিকভাবে ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ক্রেডিট স্কোর তৈরি হবে। উদ্যোক্তারা এই ঋণ ব্যবহার করে পণ্যের মজুদ বাড়াতে, ব্যবসার পরিধি সম্প্রসারণে এবং আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি করতে পারবেন।

প্রিয়শপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকুল আলম খান বলেন, “খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন আমাদের অর্থনীতির ভার বহন করে; তবুও সুবিধাবঞ্চিত থাকে। এই প্রথম এআই-ঋণ বিতরণের মাধ্যমে আমরা কেবল মূলধন উন্মোচন করছি না, আমরা ভবিষ্যতের পথও উন্মোচন করছি।”

কমিউনিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কিমিয়া সাদাত বলেন, “প্রিয়শপের সাথে আমাদের এই অংশীদারিত্ব মুদি দোকানিদের জন্য আর্থিক অন্তর্ভুক্তির প্রতি আমাদের একটি গভীর অঙ্গীকারের প্রতিফলন। প্রিয়শপের অত্যাধুনিক এআই প্রযুক্তির সাথে আমাদের আর্থিক সেবা একত্রিত করে, আমরা এমএসএমই এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য নতুন পথ তৈরি করছি।”

এআই-চালিত ঋণের প্রথম গ্রহীতা মুদি দোকানি নজরুল ইসলাম তার স্বস্তির কথা জানিয়ে বলেন, “ঋণ পাওয়াটা সবসময় দুঃস্বপ্নের মতো ছিল। অনেক কাগজপত্র, অনেক প্রত্যাখ্যান সাধারণত পেতে হয় ঋণ পেতে হলে। আজ আমি মাত্র কয়েক মিনিটেই ঋণ পেয়ে গেলাম। এটা আমাকে আমার ব্যবসার জন্য সহজেই পণ্য সংগ্রহ করতে সাহায্য করবে। মনে হচ্ছে সিস্টেমটা অবশেষে আমাদের অনুকূলে।”

এআই-চালিত ঋণ কর্মসূচিটি প্রথম বছরেই উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ঋণ বিতরণ করবে বলে প্রত্যাশিত, যা সরাসরি এমএসএমইগুলোর ক্রয়ক্ষমতা, পণ্য সম্প্রসারণ এবং লাভজনকতা বৃদ্ধি করবে। কর্মক্ষম মূলধনে দ্রুত প্রবেশাধিকার প্রদানের মাধ্যমে, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে এবং ২০০ বিলিয়ন ডলারের এমএসএমই অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এআই-ভিত্তিক বিকল্প ক্রেডিট স্কোরিং বাংলাদেশের আর্থিক খাতে উদ্ভাবনের নতুন মানদণ্ড তৈরি করতে সক্ষম হবে। এটি শুধু ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি সহজ করবে না বরং সম্মিলিতভাবে একটি স্মার্ট, প্রযুক্তি-নির্ভর এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক আর্থিক পরিবেশ গড়ে তুলতেও সক্ষম হবে।

image

আপনার মতামত দিন