বয়স্কদের সেবায় বুদ্ধিমান রোবট: ভবিষ্যতের বয়স্কসেবা কি প্রযুক্তির হাতে?

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
চীনের জনসংখ্যা কাঠামোতে এক বড় পরিবর্তন ঘটছে-বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এর ফলে বাড়ছে পরিবারগুলোর ওপর চাপ, বিশেষ করে যখন পর্যাপ্ত সংখ্যক caregiving কর্মী পাওয়া যাচ্ছে না। এই প্রেক্ষাপটে চীনের শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক যুগান্তকারী উদ্যোগ নিয়েছে-বয়স্কদের সেবায় পরীক্ষামূলকভাবে ‘বুদ্ধিমান’ রোবট ব্যবহারের নির্দেশনা।

‍রোবট পরীক্ষার মূল উদ্দেশ্য কী?
চীন সরকার জানতে চায়, বর্তমান caregiving সংকট মোকাবিলায় রোবট কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এ জন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্তত ২০০টি রোবট নির্মাণের আহ্বান জানানো হয়েছে, যেগুলো ২০টি ভিন্ন স্থানে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করতে হবে।

প্রতিষ্ঠানগুলোর অবশ্যই নির্দিষ্ট কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে-বয়স্কদের সেবা প্রদানের অভিজ্ঞতা, আর্থিক সক্ষমতা, পরিবেশগত দৃষ্টিভঙ্গি এবং নিরাপত্তা বিষয়ক রেকর্ড। সফল আবেদনকারীদের আগামী দুই বছরের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল জমা দিতে হবে।

রোবটগুলো কী ধরনের কাজ করতে পারবে?
মন্ত্রণালয়ের একটি পৃথক নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রোবটগুলোর দক্ষতা যাচাই করা হবে নিচের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের ভিত্তিতে:
>>রান্না ও ঘর পরিষ্কার
>>বয়স্কদের হাঁটার সময় সহায়তা, পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা
>>প্রয়োজনে তাদের দাঁড় করাতে পারা
 >>শৌচকার্যে সাহায্য এবং খাওয়াতে সক্ষমতা
>>প্রাথমিক ডিমেনশিয়া শনাক্তকরণ
>>ডিমেনশিয়া আক্রান্তদের জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়া ও পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা

এছাড়াও, রোবটের মধ্যে থাকতে হবে যোগাযোগের ক্ষমতা-যেমন ভিডিও কল, চীনের বিভিন্ন উপভাষায় আলাপ, বই বা সংবাদপত্র পড়ে শোনানো, ইত্যাদি। এসব ক্ষমতা বয়স্কদের একাকিত্ব দূর করতে বিশেষভাবে সহায়ক হবে।

মানবিক ছোঁয়া: পোষা প্রাণীর মতো?
রোবটগুলোকে স্পষ্টভাবে পোষা প্রাণীর বিকল্প বলা হয়নি, কিন্তু তাদের ভূমিকা অনেকটাই সে রকম। তারা শুধু সেবা দেবে না, বরং এক ধরনের মানসিক সঙ্গী হিসেবেও কাজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

চীন একা নয়, এ দৌড়ে আছে জাপানও
চীন ছাড়াও জাপান বহু বছর ধরেই রোবটিক্স ব্যবহার করছে বয়স্কদের সেবায়। কর্মীর অভাব ও প্রবীণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এই প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান সেখানে বাস্তবতা হয়ে উঠছে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ২০২২ সালে ইলন মাস্কও চীনের সাইবারস্পেস প্রশাসনের জন্য একটি নিবন্ধে বয়স্কদের জন্য রোবট ব্যবহারকে সমর্থন করেন।

চীনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে এক সাহসী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ। রোবটরা কি মানুষের মতোই যত্ন নিতে পারবে? না কি তারা শুধু সহায়কের ভূমিকায় সীমাবদ্ধ থাকবে? প্রশ্নগুলো আজও উন্মুক্ত। তবে এটুকু স্পষ্ট-প্রযুক্তি মানবসেবার নতুন পথ উন্মোচন করছে, আর চীন তার প্রথম সারিতে থাকতে চায়। সূত্র: দ্য রেজিস্টার
image

আপনার মতামত দিন