এআই ভিডিও জেনারেটর আনল অ্যাডোবি, ওপেনএআইকেও টেক্কা দেবে

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভিডিও তৈরির জন্য ফায়ারফ্লাই মডেল উন্মোচন করল অ্যাডোবি। ব্যবহারকারীর বিভিন্ন টেক্সট নির্দেশনা অনুযায়ী পছন্দ মতো ভিডিও তৈরি করে দিতে পারবে এটি। ওপেনএআইয়ের সোরা ও মেটার মুভি জেন এআই ভিডিও জেনারেটরের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে অ্যাডোবির নতুন মডেলটি।

এর আগে ইমেজ মডেল, ভেক্টর মডেল ও ডিজাইন মডেলের মতো বেশ কিছু এআই জেনারেটিভ মডেল চালু করেছে অ্যাডোবি। এআই-ভিত্তিক ফায়ারফ্লাই মডেলটিকে ফটোশপ, এক্সপ্রেস, ইলাসট্রেটর, সাবসটেন্স ৩ ডিসহ আরও বিভিন্ন অ্যাডোবির পণ্যে যুক্ত করা হয়েছে।

মডেলটি ১০০ টিরও বেশি ভাষার টেক্সট নির্দেশনা সমর্থন করে। এই মডেল বিশ্বজুড়ে ব্যবহারকারীদের জন্য আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করে দিতে পারবে, যা বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য নিরাপদ ডিজাইন করা হয়েছে। এখন কোম্পানিটির নতুন সংযোজন হলো ফায়ারফ্লাই ভিডিও মডেল।

চলতি বছরের শুরু থেকেই ফায়ারফ্লাই ভিডিও মডেল আসবে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। অ্যাডোবির ওয়েবসাইটে পাবলিক বেটা হিসেবে পাওয়া যাবে এই মডেল। এটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে।

আবার অ্যাডোবি প্রিমিয়ার প্রো-তেও ফায়ারপ্লাই ভিডিও মডেল পাওয়া যাবে। তবে সেখানে জেনারেটিভ এক্সটেন্ড নামক একটি নতুন ফিচারের মধ্যে এটি থাকবে। টুলটি ৭২০ পিক্সেল বা ১০৮০ পিক্সেল রেজলিউশন ও ২৪ এফপিএসে ক্লিপের দৈর্ঘ্য দুই সেকেন্ড পর্যন্ত বাড়ানোর সুবিধা দেয়। ফলে অপ্রত্যাশিত গতির পরিবর্তনের মতো ফুটেজের ছোটখাটো বিষয় সমন্বয় করতে সাহায্য করবে এই টুল।

এ ছাড়া অডিওর মান উন্নত করার জন্যও এই টুল ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সাউন্ড এফেক্ট এবং অ্যামবিয়ান্ট সাউন্ডের দৈর্ঘ্য ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত বাড়ানো। তবে এটি বক্তৃতা বা মিউজিকের সম্প্রসারণ সমর্থন করে না। টুলটি ভিডিও এবং অডিও সম্পাদনায় ছোটখাটো পরিবর্তনের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

ওয়েব সংস্করণের জন্য অ্যাডোবি দুটি নতুন ভিডিও জেনারেশন টুল চালু করতে যাচ্ছে। একটি হলো টেক্সট টু ভিডিও এবং অপরটি হলো ইমেজ টু ভিডিও। টুল দুটি ফায়ারফ্লাই ওয়েব বেটা সংস্করণে না সীমিত আকারে পাওয়া যাচ্ছে।

টেক্সট টু ভিডিও টুলটি রানওয়ে ও সোরার মতো কাজ করবে। ব্যবহারকারীরা টেক্সটের মাধ্যমে বর্ণনা দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারবে। টুলটি বিভিন্ন স্টাইল অনুকরণ করতে সক্ষম। যেমন-ট্রেডিশনাল ফিল্ম, ৩ডি অ্যানিমেশন এবং স্টপ মোশন।

এ ছাড়া ইমেজ টু ভিডিও টুলটি ভিডিও জেনারেশন প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত করবে। কারণ এটি ব্যবহারকারীদের একটি রেফারেন্স ইমেজের পাশাপাশি একটি টেক্সট প্রম্পট বা নির্দেশনা দেওয়ার করার সুযোগ পায়। ফলে ভিডিওটি কেমন হবে তার ওপর আরও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে ব্যবহারকারীরা।

অ্যাডোবির টেক্সট টু ভিডিও এবং ইমেজ টু ভিডিও এবং জেনারেটিভ এক্সটেন্ড প্রতিটি টুল দিয়ে ভিডিও তৈরিতে প্রায় ৯০ সেকেন্ড সময় লাগে। এই সময় আরও কমিয়ে আনতে অ্যাডোবি টার্বো মোড তৈরি করছে।

ভিডিও টুলগুলোর কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অ্যাডোবি জোর দিয়ে বলছে যে, এগুলো বাণিজ্যিকভাবে নিরাপদ। কারণ মডেলগুলো এমন কনটেন্টে ওপর ভিত্তি করে তৈরি যেগুলোর ব্যবহারের অধিকার কোম্পানির রয়েছে।

অন্যান্য কোম্পানির এআই ভিডিও জেনারেটরের সঙ্গে এটি একটি বড় পার্থক্য। যেমন, রানওয়ে ভিডিও জেনারেটরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, এই মডেল প্রশিক্ষণে বিপুল পরিমাণ ইউটিউব ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া মেটাও সম্ভবত ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী ব্যক্তিগত ভিডিও ব্যবহার করে মুভি জেন এআই মডেলতে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার জন্য এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার জন্য এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ফায়ার ফ্লাই ভিডিও মডেল এখন তার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে পাবলিক বেটায় সীমিতভাবে পাওয়া যাবে। নতুন এই টুলগুলো ব্যবহার করতে হলে ওয়েটিং লিস্ট বা অপেক্ষমাণ তালিকায় যুক্ত হতে হবে। এই সীমিত পাবলিক বেটা পর্যায়ে ভিডিও জেনারেশন মডেলটি বিনা মূল্যে ব্যবহার করা যাবে। তবে পরীক্ষামূলক পর্যায় পার হয়ে চূড়ান্তভাবে মডেলটি চালু করলে অ্যাডোবি এর মূল নির্ধারণ করবে ও অফার সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করবে। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে, দ্য ভার্জ, টেকক্রাঞ্চ
image

আপনার মতামত দিন