মানুষের মস্তিষ্কের ভাবনা শব্দে রূপান্তর করবে সেন্সরযুক্ত হেলমেট

প্রকাশ: শনিবার, ০৯ নভেম্বর, ২০২৪
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
এখন  মানুষের মনে কি হচ্ছে, মানুষ কী ভাবছে, সেটা পড়তে পারবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই। প্রথমবারের মতো এমনই প্রযুক্তি এনেছেন বিজ্ঞানীরা। এ প্রযুক্তির সাহায্যে সেন্সরযুক্ত একটি হেলমেট পরলে মানুষের মস্তিষ্কে থাকা ভাবনাকে শব্দে রূপান্তর করে লিখে দেবে এআই। হেলমেটে থাকা সেন্সর মানুষের মস্তিষ্কের ইলেকট্রিক্যাল কার্যক্রম শনাক্ত করে তার ভাবনাকে শব্দে রূপান্তর করবে।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির একদল গবেষক এ প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করছেন। তাঁরা বলছেন, যেসব রোগী কথা বলতে অক্ষম বা স্ট্রোক ও পক্ষাঘাতের কারণে যাঁদের কথা বলতে সমস্যা, তাঁদের চিকিৎসায় এ প্রযুক্তি সহায়ক হবে। প্রযুক্তিটির একটি নমুনা প্রদর্শনীও হয়েছে। সেই প্রদর্শনীর ভিডিওতে দেখা যায়, একজন মানুষকে কোনো সুনির্দিষ্ট বিষয়ে ভাবার কথা বলা হয়েছে। তিনি যা ভাবছেন, সেটিই পর্দায় লিখিত আকারে দেখা যাচ্ছে। এতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষের ভাবনাকে ডিকোড করেছে। মানুষের ভাবনা ও লিখিত বর্ণনার খানিকটা পার্থক্য থাকলেও মূল ভাব একই রকম।

এ গবেষক দলের প্রধান গবেষক সিটি লিন বলেন, এই গবেষণা ইইজি তরঙ্গকে সরাসরি ভাষায় অনুবাদ করার ক্ষেত্রে একটি অগ্রণী প্রচেষ্টা। এ ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এনেছে। ‘ব্রেন টু টেক্সট’ ট্রান্সলেশন প্রক্রিয়ায় নিউরাল ডিকোডিংয়ে এটি একটি নতুন কৌশলও যোগ করেছে। লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল এ প্রযুক্তিতে যুক্ত হওয়ায় স্নায়ুবিজ্ঞান ও এআই নিয়ে নতুন কাজের পথ উন্মোচিত হয়েছে।

প্রযুক্তিটি যাচাইয়ের জন্য লিন ও তাঁর দল ২৯ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর একটি পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালিয়েছে। যেখানে অংশগ্রহণকারীদের মাথায় হেলমেট পরিয়ে একটি লিখিত কাগজ দেওয়া হয়। কাগজে লেখা বাক্য নিয়ে তাঁদের ভাবতে বলা হয়। পরে কাগজে লেখা বাক্যের প্রায় অনুরূপ বাক্যই পর্দায় দেখা গেছে। যাচাইকারীদের পর্যবেক্ষণ অনুসারে এই রূপান্তরের যথার্থতা ৪০ শতাংশ।

এর আগে মস্তিষ্কের সংকেতকে শব্দে রূপান্তর করার জন্য মানুষের মস্তিষ্কে ইলেকট্রোড স্থাপন করতে হতো, যার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। ইলন মাস্কের নিউরালিংক এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে। এ ছাড়া এমআরআই মেশিন দিয়ে স্ক্যানও করতে হতো।

এদিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মানুষের মতোই কথা বলবে এবং আচরণ করবে বলে জানিয়েছেন মাইক্রোসফটের সিইও মোস্তফা সুলেমান।

তিনি বলেন, কল্পনা করুন আপনার পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্ট আপনার স্টাইল, ছন্দ সব রপ্ত করে ফেলেছে। কোন কোন তথ্য আপনার জন্য জরুরি, সোজা কথায় গভীরভাবে ব্যক্তিগত হয়ে ওঠা। আর তা আপনারই অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করতে।

তার দাবি, অদূর ভবিষ্যতে কেবল কাজ নয়, মানুষের জীবনযাপনকেও আরও ‘স্মার্ট’, আরও নিখুঁত করে তুলবে এআই। প্রথমবার ভারত সফরে এসে  তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিখ্যাত সংস্থার এআই ডিভিশনের সিইও তিনি। মাইক্রোসফটের ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের সভাপতি পুনীত ছন্দকও ছিলেন সুলেমানের সঙ্গে।

তারা আগামী দিনে কোটি কোটি মানুষের পাশে দাঁড়াতে কী কী পরিকল্পনা করেছেন, সেকথাও তুলে ধরেন । যার মধ্যে অন্যতম ‘কিশানএআই’। এই এআই টুল সরকারকে সাহায্য করবে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছনোর। ‘রিয়েল টাইম’ তথ্য দিয়ে দেশটির কৃষকদের সাহায্য করবে।

সাম্প্রতিক অতীতে এইচসিএলের সাবেক সিইও বিনীত নায়ার দাবি করেছিলেন, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বড়সড় প্রভাব ফেলবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যার ফলে অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে ছাড়াই কাজ চালিয়ে দেয়া সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগেও এআই সম্পর্কে মানুষের তেমন ধারণা ছিল না। কিন্তু  এই মুহূর্তে চ্যাট জিপিটি থেকে কো-পাইলট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জগতে ‘টক অব দ্য টাউন’। এই প্রযুক্তি মানুষের মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সূত্র: ডেইলি মেইল, দ্য ভার্জ
image

আপনার মতামত দিন