‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ অ্যাপ ব্যবহারের তাগিদ মোদি সরকারের

প্রকাশ: শনিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png নিজস্ব প্রতিবেদক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার তিন সদস্য দেশীয় প্রযুক্তি অ্যাপ ব্যবহারের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেছেন। তারা গুগল ম্যাপস, হোয়াটসঅ্যাপ ও মাইক্রোসফটের বিকল্প হিসেবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর তৈরি অ্যাপ প্রচার করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের মধ্যেই এ উদ্যোগ এসেছে।

গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ভারতীয় আমদানির ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করলে, মোদি দেশীয় পণ্য ব্যবহারের আহ্বান জানান।

জোহো ও ম্যাপমাইইন্ডিয়ার ব্যবহার
তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এ সপ্তাহে একটি মহাসড়ক প্রকল্প উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, এটি তৈরি হয়েছে জোহোর সফটওয়্যারে, মাইক্রোসফট  পাওয়ারপয়েন্টে নয়। এছাড়া মানচিত্র বানানো হয়েছে ম্যাপমাইইন্ডিয়ার মাধ্যমে, গুগল ম্যাপসের মাধ্যমে নয়। তিনি বলেন, “সুন্দর দেখাচ্ছে, তাই না? স্বদেশি।”

দেশীয় পণ্যের প্রচারণা
বৈষ্ণব সম্প্রতি একটি ভিডিওবার্তায়ও জোহোর সফটওয়্যার ব্যবহার করে দেখান। মানুষকে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের আহ্বান জানান। এক্সে দেওয়া ওই ভিডিও ৬২ লাখবার দেখা হয়েছে।

আমেরিকান ব্র্যান্ডের প্রভাব
ভারতে মার্কিন ব্র্যান্ডের প্রভাব এখনও ব্যাপক। সরকারি ও বেসরকারি অফিসে ব্যবহৃত হয় মাইক্রোসফট সফটওয়্যার। ভ্রমণকারীরা পথ খোঁজেন গুগল ম্যাপস দিয়ে। হোয়াটসঅ্যাপের সবচেয়ে বড় বাজারও ভারত ব্যবহারকারী সংখ্যা ৫০ কোটির বেশি। এই তিন মার্কিন কোম্পানি রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।

আরাট্টাই মেসেজিং অ্যাপ
বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ও শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান দেশীয় মেসেজিং অ্যাপ আরাট্টাই-এর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। ‘আরাট্টাই’ তামিল ভাষায় অর্থ “চ্যাট”। গোয়েল এক্সে লিখেছেন, “মেড ইন ইন্ডিয়া প্ল্যাটফর্ম আরাট্টাইয়ে থাকতে পেরে গর্বিত।”

সেন্সর টাওয়ারের তথ্য বলছে, গত মাসে অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে ৪ লাখের বেশি বার। আগস্টে যেখানে ডাউনলোড ছিল মাত্র ১০ হাজার। সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখে দৈনিক সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা এক লাফে ১ লাখে পৌঁছায়।

চ্যালেঞ্জ
বিশ্ববাজারে বড় ব্র্যান্ডের বিকল্প হয়ে ওঠা ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য সহজ নয়। তাদের আর্থিক সামর্থ্য ও বাজার বিস্তারের অভাব রয়েছে। ২০২১ সালে দেশীয় প্ল্যাটফর্ম কু-কে টুইটারের বিকল্প হিসেবে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু তহবিল সংকটে সেটি ২০২৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
জনসংযোগ বিশেষজ্ঞ দিলীপ চেরিয়ান মনে করেন, শুধু রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা যথেষ্ট নয়। জোহো বা আরাট্টাইয়ের মতো ব্র্যান্ড টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন আলাদা বৈশিষ্ট্য, বড় বিনিয়োগ এবং ডেটা সুরক্ষায় শক্ত অবস্থান। সূত্র: রয়টার্স, ইকোনমিক টাইমস, ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস

image

আপনার মতামত দিন