স্বর্ণপদক জয় করল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা!

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন শুধু ছবি আঁকে বা গল্প লেখে না-এবার সে বিশ্বমানের গণিত প্রতিযোগিতায়ও স্বর্ণপদক জয়ের মান অর্জন করেছে। ওপেনএআইয়ের তৈরি একটি পরীক্ষামূলক এআই মডেল ২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড (আইএমও) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪২ নম্বরের মধ্যে ৩৫ নম্বর পেয়েছে, যা এই অলিম্পিয়াডে স্বর্ণপদকের জন্য ভূমিকার রেখেছে।

বাস্তব পরীক্ষার পরিবেশে এআই
ওপেনএআইয়ের প্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তা আলেকজান্ডার ওয়েই জানিয়েছেন, এআই মডেলটি সম্পূর্ণ বাস্তব আইএমও পরীক্ষার মতো পরিবেশে অংশ নেয়। অর্থাৎ, মডেলটি ইন্টারনেট কিংবা বাইরের কোনো সহায়তা ছাড়াই পরীক্ষায় বসে এবং ছয়টি গাণিতিক সমস্যার মধ্যে পাঁচটি সফলভাবে সমাধান করে। প্রতিটি সমস্যার পূর্ণ বিবরণ বিশ্লেষণ করে মডেলটি প্রাকৃতিক ভাষায় যুক্তিসম্পন্ন প্রমাণ তৈরি করেছে-যেটি এক বিশাল অগ্রগতি।

প্রমাণের নির্ভুলতা নিশ্চিত করেছে মানব বিশেষজ্ঞরাই
আলেকজান্ডার ওয়েই এক্স (সাবেক টুইটার)-এ দেওয়া এক পোস্টে জানান, “২০২১ সালে আমার পিএইচডি উপদেষ্টা আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন-২০২৫ সালের মধ্যে এআই গণিতে কতটা অগ্রসর হতে পারবে? আমি ভেবেছিলাম ৩০ শতাংশ স্কোর করাই হবে বিশাল অর্জন। এখন আমাদের মডেল অলিম্পিয়াডের স্বর্ণপদকের মানে পৌঁছে গেছে!”

এই স্কোর যাচাই করেছেন তিনজন সাবেক আইএমও পদকজয়ী ব্যক্তি। তাঁদের স্বাধীন মূল্যায়নে মডেলটির উত্তরের মান ৩৫ বলে স্বীকৃতি পেয়েছে। তবে এখনো এটি আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায়নি। নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্যারি মার্কাস এ বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

গুগলের ‘আলফাজিওমেট্রি ২’-এর পর আরও এক ধাপ এগিয়ে
এ বছর গুগলের ডিপমাইন্ড থেকে ‘আলফাজিওমেট্রি ২’ নামে একটি মডেল উন্মোচন করা হয়, যা জ্যামিতিক সমস্যা সমাধানে অলিম্পিয়াডজয়ী শিক্ষার্থীদের মান অর্জনের দাবি করেছিল। তবে ওপেনএআইয়ের নতুন মডেলটিকে মনে করা হচ্ছে আরও বড় এক মাইলফলক। কারণ, এটি শুধু নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ের জন্য নয়, বরং সাধারণ বুদ্ধিমত্তার (জেনারেল ইন্টেলিজেন্স) ভিত্তিতে তৈরি। এই মডেল পারদর্শিতা দেখিয়েছে যুক্তি, বিশ্লেষণ ও ভাষাভিত্তিক প্রমাণে-যা কেবল গণিতেই নয়, ভবিষ্যতে অনেক জটিল মানবিক সমস্যার সমাধানেও সহায়ক হতে পারে।

ভবিষ্যতের পথে বড় এক ধাপ
এআই মডেলগুলো এখন আর কেবল হিসাব কষা যন্ত্র নয়-এরা যুক্তি দিতে পারে, সিদ্ধান্ত নিতে পারে, এমনকি প্রমাণ রচনা করতেও সক্ষম। ওপেনএআইয়ের এই সাম্প্রতিক সাফল্য প্রমাণ করে, আমরা হয়তো সত্যিই সেই যুগের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে মানুষের মতো চিন্তা করতে সক্ষম এআই আমাদের শিক্ষায়, গবেষণায়, এমনকি সৃজনশীলতায়ও সমানভাবে অংশ নিতে পারবে। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

image

আপনার মতামত দিন