যুদ্ধকালীন মোডে ইলন মাস্ক, অফিসেই কাটছে রাত 

প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ জুলাই, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

যখনই প্রযুক্তি দুনিয়ায় নতুন কিছু ঘটে, অনেক সময়ই তার পেছনে ইলন মাস্কের নাম জড়িয়ে যায়। যেন একাই একেকটা ভবিষ্যৎ গড়ছেন তিনি-স্পেসএক্সে মহাকাশ, টেসলায় পরিবেশ, এক্সে যোগাযোগ। এবার নিজের ঘুমের জায়গাটাও বদলে ফেলেছেন! পরিবার বা বিশ্রাম ভুলে অফিসেই কাটাচ্ছেন রাত। তিনি আর বাসায় ফিরছেন না, অফিসেই ঘুমাচ্ছেন! সপ্তাহের সাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন একটানা। মাস্কের ভাষায়, এখন তিনি রয়েছেন ‘পুরোদমে যুদ্ধকালীন মোডে’।

এক্সে পোস্ট, অফিসে রাত
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে ইলন মাস্ক জানান, তাঁর ছোট সন্তানরা এখন পাশে নেই, তাই তিনি পুরো সময় কাজেই ব্যয় করছেন। তিনি লিখেছেন, “সপ্তাহের সাত দিন কাজ করছি, অফিসেই ঘুমাচ্ছি।” এর সঙ্গে তিনি একটি পুরোনো ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে টেসলার এক সংকটকালে তাঁকে দিনরাত পরিশ্রম করতে দেখা যায়।

ভিডিওতে মাস্ক নিজেই বলেন, “এই পরিমাণে কাজ করা উচিত নয়। এটা ভালো কিছু নয়। এটা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। আমার মাথা আর হৃদয় ব্যথায় ভরে ওঠে।”

চাপে মাস্ক: টেসলা থেকে এক্স, এআই থেকে মহাকাশ
বর্তমানে ইলন মাস্কের কাঁধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের ভার। এক্স-এর রূপান্তর প্রক্রিয়া, টেসলার প্রযুক্তি উন্নয়ন, স্পেসএক্সের মহাকাশ মিশন, নিউরালিংকের গবেষণা, এমনকি এআই নিয়ে নতুন উদ্যোগ-সব মিলিয়ে পরিস্থিতি দিনকে দিন জটিল হয়ে উঠছে। এই চাপে তিনি নিজেই আবার নিজের সেই পুরোনো যুদ্ধমুখী রূপে ফিরেছেন।

নতুন রাজনৈতিক দল, পুরোনো আচরণ
শুধু প্রযুক্তি নয়, এবার রাজনীতিতেও পা রেখেছেন ইলন মাস্ক। হোয়াইট হাউসের উপদেষ্টা পদ ছেড়ে দিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন তিনি। অনেকেই মনে করছেন, এই সিদ্ধান্তও তাঁর স্বভাবসুলভ হঠকারী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।

তবে মাস্কের এমন ‘যুদ্ধকালীন’ মনোভাব নতুন কিছু নয়। ২০১৮ সালে সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, টেসলার মডেল থ্রি গাড়ির উৎপাদন সমস্যার সময় তিনি সপ্তাহে ১২০ ঘণ্টা কাজ করতেন এবং কারখানার মেঝেতে ঘুমাতেন। সে সময় তাঁর ভাষায়, “জীবন-মৃত্যুর লড়াই চলছিল। প্রতি সপ্তাহে ৫০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছিল। হাতে টাকাও প্রায় ফুরিয়ে গিয়েছিল।”

কর্মীদের জন্যও একই প্রত্যাশা
ইলন মাস্ক শুধু নিজে পরিশ্রম করেন না, তাঁর কর্মীদের কাছ থেকেও একই মাত্রার নিষ্ঠা প্রত্যাশা করেন। ২০২২ সালে টুইটার কিনে নেওয়ার পর এক ই-মেইলে তিনি সাফ জানিয়ে দেন-যাঁরা দীর্ঘ সময় ও পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারবেন না, তাঁদের জন্য পথ খোলা। পরবর্তীতে সান ফ্রান্সিসকো কার্যালয়ের কিছু কক্ষে শোয়ার জায়গা তৈরি করে কর্মীদের সেখানেই থাকতে উৎসাহিত করা হয়।

মাস্কের কাজ-পাগল স্বভাব: প্রশংসা না বিতর্ক?
ইলন মাস্কের এমন কাজকেন্দ্রিক জীবনধারা একদিকে অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা, আবার অন্যদিকে অনেকে একে অমানবিক এবং কর্মক্ষেত্রের ভারসাম্যহীন সংস্কৃতি বলেও সমালোচনা করেন। তবে এটাও ঠিক, এমন কঠোর রুটিনই তাঁকে প্রযুক্তি জগতের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও আলোচিত ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

image

আপনার মতামত দিন