তরুণ তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা রেডিসন ডিজিটাল টেকনোলজি লিমিটেডের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ফারুফ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবসাকে বেছে নিয়েছিলেন। বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয় তিনি।
কুমিল্লার লাকসামে তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন নিজ উদ্যোগে স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তার প্রতিষ্ঠিত কলেজের সাফল্যও বলার মতো। সব চেয়ে বড় বিষয় তার কলেজে পড়াশুনা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করানো হয়। এছাড়াও ‘দৈনিক আমাদের কাগজ’ পত্রিকার প্রকাশনা এবং সম্পাদনাও করেন দেলোয়ার হোসেন ফারুক। পরিবর্তন ফাউন্ডেশন নামে একটি এনজিও-এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত আছেন তিনি।
আগামীকাল শনিবার কারওয়ান বাজারের বিডিবিএল ভবনের পঞ্চম তলায় বেসিস কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে বেসিস নির্বাচন। মোস্তফা জব্বারের নেতৃত্বাধীন ডিজিটাল ব্রিগেড প্যানেল থেকে অংশগ্রহণ করছেন দেলোয়ার হোসেন ফারুফ। তিনি নির্বাচিত হলে বেসিস সদস্যদের চাঁদা না বাড়িয়ে কল্যাণ তহবিল গঠন করতে চান বলে জানিয়েছেন। একই সাথে নিজের নানান পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
দেলোয়ার হোসেন ফারুক জানান, বেসিস তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত সংগঠন। বেসিস নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি অঙ্গন সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরও আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বেসিস মূলত তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। এটি হচ্ছে দেশীয় সফটওয়্যার, ই-কমার্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সেবা (আইটিএস) খাতের প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র সংগঠন।
ফারুক বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফটওয়্যার, ই-কমার্স এবং আইটিএস খাতের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এই খাতে বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার কোটি টাকার বাজার তৈরি হয়েছে। দেশে ভালো মানের সফটওয়্যার নির্মাতাদের যদি প্রমোট করা যায় তবে গার্মেন্টের পরেই বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে অন্যতম খাত হতে পারে এটি। ১৬ কোটি মানুষ মানে ১৬ কোটি ভোক্তা। সুতরাং ই-কমার্সেও আমাদের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। আমি আশাবাদী ভাল কিছু করা সম্ভব। কারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে ‘ভিশন ২০২১’ ঘোষণার পর আমরা দেখতে পাচ্ছি কত দ্রুত বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’
সাফল্যের ব্যাপারে কতটুকু আশাবাদি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে এ খাতের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট রয়েছি। আপনি একটা খাতের উন্নয়নে কাজ করতে চাইলে আন্তরিকতা, সততা এবং অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের প্যানেলে দিকে খেয়াল করুন, এখানে মোস্তফা জব্বারের মতো বর্ষিয়ান প্রযুক্তিবিদ, সংগঠক এবং নেতা রয়েছেন। তেমনি যে কোনো দায়িত্ব পালনের মতো যোগ্য ব্যক্তিত্ব রাসেল টি আহমেদ কিংবা উত্তম কুমার পালের মতো সংগঠকও রয়েছেন। ফারহানা এ রহমান থেকে শুরু করে রাশেদুল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল, আহমেদুল ইসলাম বাবু, রিয়াদ হোসেনসহ আমাদের প্যানেলের প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন এ খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, আন্তরিকতা এবং সততার মাধ্যমে বেসিসের উন্নয়নে সকলেই দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে যাচ্ছেন। তাই আশা করছি আমরাই সফল হব।’
নির্বাচনে বিজয়ী হলে কি কি করবেন তার একটি বিবরণ দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন ফারুক। তিনি বলেন, আমাদের প্যানেল থেকে সুনির্দিষ্ট ইশতেহার তো রয়েছেই। আমরা সফটওয়্যার খাত এবং বেসিস মেম্বার কোম্পানির উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়ার কথা বলছি। বেসিস সদস্যদের উন্নয়ন হলে, সফটওয়্যার খাতের উন্নয়ন হবে। দেশের উন্নয়ন হবে। এ ক্ষেত্রে আমি ব্যক্তিগতভাবে বেসিসের বার্ষিক যে সফটওয়্যার প্রদর্শনী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ডের পাশাপাশি ‘বেসিস সফটএক্সপ’ পুনরায় আয়োজন করার জন্য কাজ করব। বেসিস সদস্যদের চাঁদা না বাড়িয়ে কল্যাণ তহবিল গঠন করতে চাই। কল্যাণ তহবিলের মাধ্যমে বেসিস সদস্যদের কেউ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করতে না পারলে সহায়তা দেওয়া হবে। বেসিসের কোনো সদস্য মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন সহায়তা দেওয়া হবে। এটা আমি চালু করতে চাইব।
তিনি আরো বলেন, পিপিআর সংশোধনের মাধ্যমে সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে দেশীয় কোম্পানির অগ্রাধিকার নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করব। বার্ষিক সদস্য নবায়ন ফি যেটি রয়েছে এটি অনেক কোম্পানির জন্যই খানিক বেশি বলা যায়। বার্ষিক সদস্য নবায়ন ফি কমানোর চেষ্টা করব।
তিনি আরও বলেন, বেসিস থেকে ব্রাক ব্যাংক কার্ড ব্যবহারের জন্য বেসিস অতিরিক্ত কোনো চার্জ যেন না নেয়, এ উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমি নির্বাচিত হলে এ ধরনের অতিরিক্ত চার্জ যেন না নেওয়া হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বেসিস সদস্যদের সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে প্রতি দুই মাস অন্তর অন্তর মিটআপ আয়োজন করা হবে। এখানে বেসিস সদস্য কোম্পানির সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। বিশেষায়িত সফটওয়্যার নিয়ে তিন মাস অন্তর মেলা আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
নিউজটি বিবার্তায় প্রকাশ হয়েছে। দেখতে যেতে হবে
এই ঠিকানায়।