জাতীয় নির্বাচনে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কৌশল

প্রকাশ: বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১৮
Image টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
news-banner
  ছবি: সংগৃহীত

আমাদের দৈনন্দিন কাযক্রমে ডিজিটাল ছোঁয়া লাগলে সেটাতেই পরিশ্রম কমে যায়, সেই সাথে ফলাফল অত্যন্ত ভাল হয়। কিন্তু এটা সত্য আমাদের দেশের যেকোন কিছুতেই ডিজিটালাইজড পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বহুদিনের চেষ্টার পর পরিবর্তনগুলো আসছে।

 

সামনে জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনের প্রচারে কেউ কেউ ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে প্রচারণা শুরু করেছে। এটা ভাল লক্ষণ। এখনও যারা ডিজিটালাইজড প্রচারণার ব্যাপারে সঠিক পরিকল্পনা করতে পারছেন না, তাদের জন্যই আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে একটি সংক্ষিপ্ত গাইডলাইন প্রস্তুত করেছি।

 

) প্রার্থীর নিজস্ব ওয়েবসাইট

সংক্ষিপ্ত : প্রার্থীর অবশ্যই নিজস্ব একটি ওয়েবসাইট থাকতে হবে। সেই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়মিত একটা বড় অডিয়েন্স গড়ে তুলতে পারলে তাদেরকে পরবর্তীতে ভোটারে রূপান্তর করা সম্ভব। আর ফেসবুক পেইড মার্কেটিং করার ক্ষেত্রেও সাইটে পিক্সেল সেটআপ করে রিটার্গেটিং মার্কেটিং করতে সাইটটি অনেক কাযকরী হবে।

 

ওয়েব সাইটটিকে কাযকরী করার জন্য কিছু পরামর্শ

) হোম পেজে যা যা থাকবে-

প্রার্থীর পরিচয়।

ভোটে জিতলে কি কি করবে তার ওয়াদা

এলাকাতে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যাগুলো তুলে ধরা এবং তার কার্যকরী সমাধানের সুস্পষ্ট পদক্ষেপ তুলে ধরা। এটা ইনফোগ্রাফিক ডিজাইন হবে। যা এলাকার মানুষদের দ্বারা প্রচুর শেয়ার হবে।

অতীতে কি করেছি সেগুলো নিয়ে স্লাইড ভিডিও।

প্রতিদিন বিভিন্ন সমস্যার টপিকস নিয়ে সাক্ষাৎকার ভিডিও।

দিনের কার্যসূচি

দিনের বিভিন্ন কর্মসূচির ছবি এবং ভিডিও গ্যালারী।

ভোটারদের বিভিন্ন প্রশ্নের ধারাবাহিক ১টি উত্তর।

 

) সাইটে থাকবে একটা ব্লগ সেকশন

ব্লগটিতে এলাকার লোকজন তার বিভিন্ন কাজের প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়ে লিখবেন।

দিনের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে নিউজ সেকশন, যা ভোটারদের কাছে আপনার অবস্থান পরিষ্কার করবে।

 

বি:দ্র: ) সাইটের প্রতিটা পোস্টে ইনফোগ্রাফিক ব্যবহারে সবচাইতে গুরুত্ব দিতে হবে।


) সাইটে প্রফেশনালমানের রেকর্ডিং ভিডিও এবং ১টি প্রফেশনাল স্লাইড ভিডিও পোস্ট করতে হবে।

 

) প্রার্থীর জন্য একটি ফেসবুক পেজ

যেকোন প্রোডাক্ট এবং ব্যক্তির ব্রান্ডিংয়ে সফলতা নির্ভর করে কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের উপর। কনটেন্ট আইডিয়া এবং কনটেন্ট তৈরিতে দক্ষতা না দেখালে কোন প্রচারণা সফলতা পায়না।

 

রাজনীতিক ব্যক্তির ফেসবুক পেজের কিছু কনটেন্ট আইডিয়া দিচ্ছি-

সংক্ষিপ্ত: একই ধরনের কনটেন্ট মানুষকে আকর্ষণ করতে পারে না। তাই যাতে সকল ধরনের কনটেন্ট নিয়মিতভাবেই যায়, সেজন্য কনটেন্ট ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করে মার্কেটিং করা উচিত। তাহলে একই টাইপ কনটেন্ট যেরকম হবেনা, সেই সাথে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট রিডাররা পাবে। তাতে খুব দ্রত ব্রান্ডিং হবে। ইমেজ, ভিডিও কনটেন্টগুলো লেখা কনটেন্টের চাইতে ৪০% বেশি ভাইরাল হয়।

 

এগুলো মানুষজন শেয়ারও করে অনেক। তবে অবশ্যই যত বেশি প্রফেশনাল ডিজাইন কিংবা ভিডিও হবে, তত বেশি দ্রত রেজাল্ট পাওয়া যায়। তাই বিষয়গুলো নজরে রেখেই কাজ করা উচিত।

 

) পোস্ট ক্যাটাগরি

পেজে প্রতিদিন মিনিমাম -১০টা পোস্ট করতে হবে।

প্রতিদিন ২টা ইনফোগ্রাফিক পোস্ট।

অবশ্যই একটা স্লাইড ভিডিও পোস্ট।

১টা লাইভ প্রশ্ন উত্তর ভিডিও।

১টা প্রি-প্রিপেয়ারড ভিডিও পোস্ট।

প্রতিদিনের কাযসূচির তাৎক্ষণিক ছবি, শর্ট ভিডিও।

নির্বাচনী এলাকার ব্যক্তিদের মতামত ভিডিও।

মিডিয়ার নিউজ পোস্ট শেয়ার করতে হবে।

 

) কনটেন্ট আইডিয়া

তার বিভিন্ন বক্তব্যের কোটেশন নিয়ে ইমেজ।

তার বিভিন্ন বক্তব্যের কোটেশন নিয়ে স্লাইড ভিডিও।

তার বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার নিয়ে ইমেজ।

তার কর্মপরিকল্পনা নিয়ে স্লাইড ভিডিও।

প্রতিপক্ষের কাজের সমালোচনার ইমেজ।

প্রতিপক্ষের কাজের সমালোচনার ভিডিও।

নিজের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে ইনফোগ্রাফিক ডিজাইন।

নিজের অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রফেশনাল ভিডিও।

এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধানমূলক সিরিজ ইমেজ।

এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধানমূলক স্লাইড ভিডিও।

প্রতিদিনের কর্মসূচি হতে কোন একটা অভিজ্ঞতা

একেক দিন একেকটা সমসাময়িক আলোচ্য বিষয় নিয়ে -১০ মিনিটের ভিডিও।

এলাকার জনসাধারণের সাথে যোগাযোগের জন্য লাইভ ভিডিও প্রোগ্রাম।

 

এছাড়া অন্যান্য যা যা করা উচিত

এলাকার ভোটারদের কাছে এসএম এস মার্কেটিং। সপ্তাহে ১দিন।

এলাকার ভোটারদের কাছে ইমেইল মার্কেটিং। অবশ্যই প্রফেশনাল ফরম্যাট

ক্যাবল নেটওয়ার্কে প্রফেশনাল বিজ্ঞাপন কিংবা থিম সং প্রচার।

নিয়মিত পত্রিকাগুলোতে বিভিন্ন কার্যক্রমের নিউজ পাবলিশের উদ্যোগ নিন।

 

কাজগুলো করবেন কিভাবে?

কাজ করার জন্য কোন ব্যক্তিকে ঠিক না করে কোন এজেন্সিকে দায়িত্ব দিয়ে দিতে পারেন। কোন এজেন্সিকে দায়িত্ব দেওয়ার আগে যা খেয়াল রাখবেন-

সেই এজেন্সি কনটেন্ট ডেভেলপে কতটা দক্ষ।

তাদের ডিজাইনার টিম কতটা প্রফেশনাল।

সেই এজেন্সির ভিডিও মেকিং টিম কতটা দক্ষ।

কোন এজেন্সির অতীতের বিভিন্ন কাজের পোর্টফলিও দেখলেই তাদের দক্ষতার ব্যপারে ভাল ধারণা নিতে পারবেন।

 

এটাই ইনবাউন্ড মার্কেটিং। আগামী জাতীয় নির্বাচনেও রকম পরিকল্পনামাফিক মার্কেটিং যারা করবে, তারাই ভোটের যুদ্ধে অনেকটুকু এগিয়ে থাকবে।

 

লেখক: মো. ইকরাম, পরিচালক নেক্সাস আইটি

Leave Your Comments