রোলেক্স ঘড়ি এত দামি কেন?

প্রকাশ: শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Image টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
news-banner
  ছবি: সংগৃহীত
টিক, টিক, টিক- ঘড়ি বলে ঠিক ঠিক ঠিক। ঘড়ি আসলে কী ঠিক বলে? ঘড়ি সময়ে কথা বলে। শুধু কী তাই.... আপনার হাত ঘড়িটি কী শুধু সময়ই বলে? না, তার চেয়েও বেশি কিছু। একটা ঘড়ি একজন মানুষের ব্যক্তিত্ব ও আভিজাত্যকেও ফুটিয়ে তোলে। হাতে হাতে মানুষভেদে ঘড়িও হয় নানারকমের, নানা ব্রান্ডের, পৃথিবীতে ক্যাসিও, রোলেক্স. টাইটান, ওমেগা- এমন শতশত ব্রান্ডের ঘড়ি পাওয়া যায়।  

তবে রোলেক্স-পৃথিবীর সবচেয়ে দামি ব্র্যান্ডগুলোর একটি। ঘড়ির এই ব্র্যান্ডটি নিয়ে কথিত আছে, ‘যদি কেউ এই ঘড়ি কিনতে চায় তাহলে হয় তাকে কারখানা বিক্রি করতে হবে নয়তো রোলেক্সের ডিজাইনার হতে হবে।’

১৯০৫-এর দিকে ইংল্যান্ডে শুরু হয় এই ঘড়ির যাত্রা। সুইস উদ্যেক্তা Hans Wilsdorf এবং  Alfred Davis এর হাত ধরে এই ঘড়ির যাত্রা। শুরুটা ইংল্যান্ডে হলেও পরে এর কারখানা সুইজারল্যান্ডে স্থানান্তর করা হয়। তবে শুরুতেই এই ঘড়ির দাম এতটা হয়নি। ধীরে ধীরে ঘড়ির দাম তাদের উন্নত ও আধুনিক মানের জন্যই বাড়তে থাকে।

 রোলেক্স ঘড়ি কেন এত দামি?
একশ বছরের বেশি সময় ধরে এই ব্র্যান্ড তার বিশেষত্ব ধরে রেখেছে। ডিজিটাল এই যুগে হাতঘড়ির তেমন একটা প্রয়োজন না থাকলেও রোলেক্সের প্রতি মানুষের আগ্রহ সেই আগের মতোই। প্রায় ২০ ফিট দূর থেকেও নজর কাড়ে এই ঘড়ি। যা হাত ঘড়ি পড়া মানুষটিকেই বিশেষভাবে ফুটিয়ে তোলে।

রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়ির দাম মূলত বিভিন্ন মডেলের ওপর ভিত্তি করে হয়। রোলেক্সের বিভিন্ন নামে বিভিন্ন মডেল রয়েছে। রোলেক্সের সবচে কমদামি ওয়েস্টার লেডিস মডেলের বর্তমান বাজারদর ৫০০০ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ৫.৫ লাখ টাকার মতো! আরেকটি মডেল সাবমেরিনার ১১৬০১০ এল এন কিনতে হলে আপনাকে খরচ করতে হবে ৮৯৫০ ডলার বা যা প্রায় ১০ লাখ টাকার কাছাকাছি!

এছাড়াও রোলেক্স ডেটোনা ১১৬৫০০ এল এন মডেলের ঘড়িটি কিনতে চাইলে আপনাকে গুনতে হবে ৩১,৫৩৫ ডলার। বাংলাদেশী টাকায় এখন যার মূল্য দাড়ায় প্রায় ৩৪ লাখ টাকায়!

কী এর বিশেষত্ব?
রোলেক্স শুধু ঘড়ি নয়, বলা যায় এটি একটি যন্ত্র। নান্দনিক ডিজাইনের এই ঘড়িতে আছে দিক নির্ণয়ক কম্পাস, ক্যালেন্ডার, অত্যাধিক ঠান্ডাবা গরম সহ্য করার ক্ষমতা। আর অবশ্যই পানি নিরোধী। একটি রোলেক্স ডিজাইন করতে একজন ডিজাইনার সময় নেন প্রায় এক বছর। মানের ব্যাপারে রোলেক্স কখনোই কার্পণ্য করে না।

রোলেক্সের ৩টি বিশেষত্ব রয়েছে-
১. এটি হাত থেকে খুলে ফেললে তা বন্ধ থাকবে, আবার হাতে দেয়ার সাথে সাথেই তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যাবে।

২. বন্ধ থেকে চালু হওয়ার পর রোলেক্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্ভুল সময় ও অন্যান্য মান নির্ণয় করতে সক্ষম।

৩. এই ঘড়ি পানি নিরোধী।

স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি এই ঘড়িতে কখনো কখনো হীরে বসানো থাকে। এই ঘড়ির বোতামটি দিনে একহাজার বার খোলা ও লাগানো যায়। কিন্তু তারপরও এটি কখনো ভাঙবে না।

 রোলেক্সের বিক্রয়োত্তর সেবা
রোলেক্স কোম্পানী বিক্রয় পরবর্তী সেবাও দিয়ে থাকে। আমেরিকার বিখ্যাত অভিনেতা পল নিউম্যানের ডেটোনা মডেলের ব্যবহার করা ঘড়িটি ২০১৭ সালে নিলামে তোলা হয়। তখন তার দাম ওঠে ১৭.৮ মিলিয়ন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২০০ কোটি টাকা। ৭০ দশকে তৈরি এই ঘড়িটির নিলাম মূল্য রোলেক্সের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।  

 একটি রোলেক্স কতদিন টিকে?
একটি রোলেক্স ঘড়ি কমপক্ষে ২০ বছর টিকে। যদি সঠিকভাবে এর যত্ন নেয়া হয় তাহলে ১০০ বছর পর্যন্ত টিকবে। আপনার যদি একটি রোলেক্স ঘড়ি থাকে তবে এর উত্তরাধিকার হতে পারবে আপনার পরবর্তী প্রজন্মও!

রোলেক্সের ঘড়ি এমনভাবে তৈরি যে এটি নারী কিংবা পুরুষ যে কারো হাতেই মানানসই। ঘড়ি প্রেমীদের কাছে নান্দনিক ডিজাইনের এই ঘড়ির কদর অনেকটা স্বপ্নের মত।   

Leave Your Comments