নতুন ব্যাটারি নিয়ে টিম ক্র্যাক প্লাটুনের সঙ্গী টেসলা

প্রকাশ: সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
Image টেকভয়েস২৪ রিপোর্ট
news-banner
  ছবি: সংগৃহীত
বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য টেসলা সার্টিফায়েড ব্যাটারি উদ্ভাবন করলো রাজশাহী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) এক দল শিক্ষার্থী। এক্ষেত্রে দলটির সঙ্গী হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলা। 

সঙ্গী হিসেবে বাংলাদেশের প্রথম ফর্মুলা স্টুডেন্ট টিম ক্র্যাক প্লাটুন-কে তাদের মডিফাইকৃত লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি বানিয়ে দিয়েছে আমেরিকান এই কোম্পানি। ব্যাটারিটির মডেল নম্বর ১৮৬৫০। 

এই ব্যাটারি প্যাকটি এখন রুয়েট ল্যাবে নিজেদের গাড়িতে অ্যাসেম্বেল করবে রুয়েটের টিম ক্র্যাক প্লাটুন। এরপর বিশ্বজয়ের স্বপ্ন নিয়ে যোগ দেবে ফর্মুলা স্টুডেন্ট কম্পিটিশন ২০২৫-এ।

এই প্রতিযোগিতার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রবিবার রুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের ২১৭ নম্বর সেমিনার হলে উদ্বোধন করা হয় ক্র্যাক প্লাটুনের ব্যাটারি প্যাকটি। 

অনাড়ম্বর এই অনুষ্ঠানে দলের সদস্যদের সাফল্য কামনা করেছেন রুয়েট উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত)  ড. তারিফ উদ্দিন আহমেদ ব্যাটারি প্যাকটি পর্যবেক্ষণ করে কিছু পরামর্শও দিয়েছেন তাদের। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তরুণ এই উদ্ভাবকদে ল্যাব ফ্যাসিলিটি এবং আর্থিক সহায়তার। এসময় উপস্থিত ছিলেন দলটির প্রধান পরামর্শক প্রফেসর ড. মো. রোকোনুজ্জামান।

রুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এর ৪র্থ বর্ষের ছাত্র সাদমান সাকীব ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র আর রাফিউল হক অয়নের নেতৃত্বে ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য সংখ্যা এখন ২৯ জন। ব্যাটারি প্যাক উদ্বোধনী সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিযোগিতার নিয়ম অনুযায়ী, ব্যটারিটির শৈলী ও প্রযুক্তির বিষয়টি পাশ করিয়ে নিতে হয়েছে টেসলার প্রকৌশলীদের কাছ থেকে। অনলাইনে যুক্ত হয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে ব্যাটারির প্যাকের নকশা ও প্রকৌশল সার্টিফায়েড করে দেন টেসলার সিনিয়র ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ার হাওয়ার্ড জিন (Howard Jin) এবং ম্যাকানিক্যাল ডিজাইন ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক অশোক ভাতিজা (Khushal Ashok Bhatija)।

এ নিয়ে টেসলার’র সঙ্গে ক্র্যাক প্লাটুন এর সম্পর্ক বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী দলেরসহ অধিনায়ক রাফিউল হক অয়ন বলেন, টেসলার সাথে আমাদের যাত্রা শুরু হয় ২০২৩ সাল থেকে। আমাদের ব্যাটারি ডিজাইন থেকে শুরু করে আমাদের রিকোয়ারমেন্ট নিয়ে টেসলার ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে তখন থেকে রেগুলার মিটিং করি। এই দীর্ঘদিনের হার্ডওয়ার্কের ফাইনাল রেজাল্ট আমরা পেয়েছি। টেসলা আমাদের ডিজাইন এবং রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী ব্যাটারি প্যাক রেডি করে পাঠায়।

নিজেদের উদ্ভাবিত সম্ভাব্য ইলেকট্রিক গাড়িতে ব্যবহার্য ব্যাটারিটির নকশা শেষ করে গত মাসেই টেসলাকে দেয়া হয়। সপ্তাহ দুয়েক আগে সেটি দেশে এসেছে বলে জানান অয়ন। 

তিনি বলেন, ২০২৩ সালের শেষের দিকে টেসলা আমাদের সঙ্গে কলাবরেশন করতে সম্মতি দিয়ে মেইল করেছে। সেই মেইলের পর আমরা দীর্ঘদিন যাবত একসঙ্গে কাজ করে ব্যাটারি মডিফাই করেছি এবং সেটা তারা স্বীকৃতিও দিয়েছে এবং সব শেষে আমাদের ব্যাটারি প্যাকটি পাঠিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের এই অর্জনকে শুধু টিমের অর্জন হিসেবে দেখছি না, আমরা এই অর্জনকে সমষ্টিগতভাবে রুয়েটের অর্জন হিসেবে দেখছি। আমাদের টার্গেট বাংলাদেশকে অটোমোবাইল সেক্টরে ডেভেলব করা এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিয়াত বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করা।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে দেশের প্রথম ইলেকট্রিক ফর্মুলা ভেহিকেল নিয়ে ফর্মুলা স্টুডেন্ট জাপানে অংশগ্রহণ করেছিল বাংলাদেশের রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ক্র্যাক প্লাটুন’। এরপর ২০২৩ সালে নতুন ইলেকট্রিক ভেহিকেল ‘সিপি-ই২৩’ নিয়ে পাড়ি জমাতে চেয়েছিলো পোল্যান্ডে। কিন্তু ভিসা জটিলতায় তা হয়নি। 

তবে সম্প্রতি ফর্মুলা ভারত ২০২৪ এ অনসাইট অংশ গ্রহণ করে তারা। প্রতিযোগিতায় বিজনেস প্ল্যান প্রেজেন্টেশনে ১০ম এবং ম্যাথওয়ার্কস মডেলিংয়ে ৬ষ্ঠ হয় তারা। তবে ২০২৫ সামনে রেখে আরেকটি ইল্যাক্ট্রিক ভেহিকল বানানোর কাজ করছে দলটি।

Leave Your Comments