রয়্যাল ক্যারিবিয়ানের নতুন জাহাজ স্টার অব দ্য সিস ফ্লোরিডা থেকে প্রথম যাত্রায় রওনা দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রুজশিপ বা ভ্রমণ জাহাজ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে এটি, সঙ্গে রয়েছে এর সহোদর জাহাজ আইকন অব দ্য সিস।
সাত রাতের এই যাত্রায় এই জাহাজটি মেক্সিকোর কোজুমেল, কোস্টা মায়া ও হন্ডুরাসের রোআতানে থামবে। ২০ তলা বিশিষ্ট বিশাল এই জাহাজ দ্বৈত আসনে ৫ হাজার ৬১০ জন যাত্রী এবং পূর্ণ সক্ষমতায় ৭ হাজারের বেশি যাত্রী বহন করতে পারবে। এই যাত্রীদের সেবায় নিয়োজিত থাকবেন ২ হাজার ৩৫০ জন নাবিক ও কর্মী।
বিলাসবহুল জাহাজে আছে সাতটি সুইমিংপুল, ছয়টি ওয়াটারস্লাইড, একটি আইস রিঙ্ক, লেজার ট্যাগ এরিনা, এস্কেপ রুম, সার্ফ সিমুলেটর ও ক্রাউনস এজ নামের রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। খাবার ও বিনোদনের জন্য রয়েছে ৪০টির বেশি রেস্তোরাঁ ও লাউঞ্জ, যার মধ্যে থাকছে নতুন সংযোজন শিকাগো-অনুপ্রাণিত লিংকন পার্ক সাপার ক্লাব।
আইকন অব দ্য সিসের মতোই স্টার অব দ্য সিসকেও আটটি ভিন্ন থিমে সাজানো হয়েছে। পরিবারবান্ধব সার্ফসাইড শিশুদের জন্য আর সেন্ট্রাল পার্ক খাবার ও বিনোদনের জন্য। এর কেন্দ্রে রয়েছে অ্যাকুয়া ডোম-২৫ মিটার উঁচু ও ৫০ মিটার চওড়া কাচের গম্বুজ, যেখানে পানিভিত্তিক নানা ক্রীড়ার ব্যবস্থা থাকছে।
স্টার অব দ্য সিসের ওজন ২ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টন; এটি আইকন অব দ্য সিসের ২ লাখ ৪৮ হাজার ৬৬৩ টনের চেয়ে সামান্য বেশি ও কিংবদন্তি কুইন এলিজাবেথ-২-এর প্রায় তিন গুণ।
ডিজনি ক্রুজ
অ্যাডভেঞ্চার হবে ডিজনি ক্রুজ লাইনের অষ্টম ও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় জাহাজ। ২ লাখ ৮ হাজার টনের এই জাহাজ ৩৪২ মিটার লম্বা। প্রায় ৬ হাজার যাত্রী বহন করতে পারে এই জাহাজ।
ডিসেম্বরে ইতিহাস গড়তে আসছে ডিজনির এই জাহাজ। এটি হবে এশিয়ায় স্থায়ীভাবে অবস্থান করা তাদের বহরের প্রথম জাহাজ। সিঙ্গাপুর থেকে তিন থেকে পাঁচ রাতের ভ্রমণে যাবে এটি। এই জাহাজ দেবে পুরোপুরি ‘সামুদ্রিক পার্টি’র অভিজ্ঞতা। কোনো বন্দরে দাঁড়াবে না এটি।
জাহাজে রয়েছে ডিজনির প্রথম সমুদ্রভিত্তিক রোলার কোস্টার, সাতটি থিম জোন ও মার্ভেলস্টাইল স্টুডিও, যেখানে প্রাপ্তবয়স্কসহ অতিথিরা সুপারহিরো সাজতে পারবেন। রয়েছে মঞ্চনাটক ও নানা ধরনের কেবিন ও স্যুট। এর প্রথম যাত্রা শুরু হবে ১৫ ডিসেম্বর, সিঙ্গাপুর থেকে তিন রাতের ভ্রমণ হবে এটি।
ওয়ার্ল্ড আমেরিকা
এমএসসি ওয়ার্ল্ড আমেরিকার ওজন ২ লাখ ৫ হাজার ৭০০ টন, দৈর্ঘ্য ৩৩৩ মিটার-রয়্যাল ক্যারিবিয়ানের আইকন-ক্লাস জায়ান্টের তুলনায় সামান্য ছোট। এটি এমএসসি ক্রুজের ওয়ার্ল্ড ক্লাস সিরিজের দ্বিতীয় জাহাজ, প্রথমটি ছিল ওয়ার্ল্ড ইউরোপা; ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এটি যাত্রা শুরু করে। তবে ইউরোপা ভূমধ্যসাগরে চললেও ওয়ার্ল্ড আমেরিকা বিশেষভাবে মার্কিন বাজারের জন্য তৈরি।
মিয়ামি থেকে যাত্রা শুরু করবে ওয়ার্ল্ড আমেরিকা। পূর্ব ও পশ্চিম ক্যারিবিয়ানে সাত রাতের পথে যাত্রা করবে এটি। থামবে পুয়ের্তো রিকো, ডমিনিকান রিপাবলিক, মেক্সিকো ও হন্ডুরাসে।
বিশাল এই জাহাজে আছে ১৯টি রেস্তোরাঁ, ২০টি বার ও লাউঞ্জ, ওয়াটার পার্ক, ফ্যামিলি অ্যাভেনচুরা থিম পার্ক (যেখানে থাকবে শিল্পের প্রথম ওভার-ওয়াটার দোলনা), কেনাকাটা ও সরাসরি বিনোদনের ব্যবস্থা।