রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের নবাই বটতলা ধর্মপল্লীতে পালিত হলো রক্ষাকারিণী মা-মারীয়ার তীর্থোৎসব। ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ এই তীর্থোৎসব পালন করা হয়।
দূর-দুরান্ত থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থী ও খ্রিস্টভক্ত এসে মিলিত হয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন এবং মাতা মারীয়ার নিকট তাদের বিশ্বাসের মানত ও প্রার্থনা নিবেদন করেন।
এ তীর্থোৎসবে রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও ও খুলনা ধর্মপ্রদেশের বিশপ রমেন বৈরাগী দুই দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মারীয়া ভক্তবিশ্বাসী, ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টার তীর্থে অংশগ্রহণ করেন।
এ তীর্থোৎসবকে কেন্দ্র করে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আলোক শোভাযাত্রা, মা মারীয়ার ওপর আলোচনা এবং পবিত্র সাক্রামেন্তীয় আরাধনা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভক্তবিশ্বাসীরা রক্ষাকারিণী মা মারীয়ার নিকট শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
তীর্থের খ্রিস্টযাগে প্রধান পৌরহিত্য করেন খুলনা ধর্মপ্রদেশের বিশপ জেমস রমেন বৈরাগী। বিশপ জেমস রমেন বৈরাগী খ্রিস্টযাগের উপদেশে বলেন, “মা-মারীয়া যিশুর মা। আর যিশু মারীয়াকে আমাদেরও মা করে পাঠিয়েছেন। নবাই বটতলাবাসী স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রাণ বাঁচানোর জন্য মা-মারীয়ার নিকট ভরসা করেছিলেন। আর মা-মারীয়া ঠিকই তাঁর স্নেহের আঁচলে ভক্তবিশ্বাসীদের রক্ষা করেছেন।”
মঙ্গলসমাচারের আলোকে তিনি বলেন, “মা-মারীয়া যেমন কানা নগরের বিবাহ উৎসবে দ্রাক্ষারস ফুরিয়ে গেলে তা যিশুকে জানান। তেমনি আমাদের সকল অভাব মা-মারীয়া ঈশ্বরের নিকট অর্পণ করেন। তবে আমরা শুধু অভাব ও বিপদেই মা-মারীয়ার শরণাপন্ন হই। মা-মারীয়ার নিকট প্রতি মুহূর্তে নিজেকে সমর্পণ করতে হয়।”
সুন্দর ও প্রার্থনাপূর্ণ আয়োজনের জন্য রাজশাহী ধর্মপ্রদেশের বিশপ জের্ভাস রোজারিও সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
নবাই বটতলা ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত স্বপন পিউরিফিকেশন মা-মারীয়ার নিকট গভীর ভক্তি-শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আপনাদের প্রত্যেকের সহযোগিতা সিনোডাল মণ্ডলীর রূপকে প্রকাশ করে। আমরা এই বছর যিশুর জন্মের জুবিলীবর্ষে রয়েছি। জুবিলী বর্ষে আমরা মা-মারীয়ার আশীর্বাদে যেন পথ চলি।
মারীয়া ভক্ত আন্তন কিস্কু বলেন, “প্রতি বছর আমি রক্ষাকারিণী মা-মারীয়ার এই তীর্থে অংশগ্রহণ করি। এই বছরের তীর্থ আমার জন্য একটু ব্যতিক্রম। রক্ষাকারিণী মা-মারীয়ার নিকট বিশেষ কারণে আমার মানত ছিলো। তাই মাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে এসেছি।”
এছাড়াও ভক্তবিশ্বাসীদের আগমন ও তীর্থের কলেবর প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী বছর আরো বৃদ্ধি পাবে এই প্রত্যাশা করি। সূত্র: বরেন্দ্রদূত।