টেক জায়ান্ট ওপেনএআইয়ের পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চ্যাটজিপিটি ২০৩০ সালের মধ্যে সাপ্তাহিক ২৬০ কোটি ব্যবহারকারী পৌঁছানোর লক্ষ্য রাখছে। এর মধ্যে প্রায় ৮.৫ শতাংশ, অর্থাৎ ২২ কোটি ব্যবহারকারী সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে পেইড সেবা গ্রহণ করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
বর্তমান সাবস্ক্রিপশন অবস্থা
এই ডেটা প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম দি ইনফরমেশন সূত্রে জানা গেছে, যা ওপেনএআই-এর ব্যবসায়িক ভবিষ্যত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ একটি সংকেত। বর্তমানে, জুলাই ২০২৫ পর্যন্ত চ্যাটজিপিটির মোট সাপ্তাহিক ব্যবহারকারীর প্রায় ৫ শতাংশ অর্থ দিয়ে ‘প্লাস’ বা ‘প্রো’ প্ল্যান ব্যবহার করছে, যেখানে মাসিক সাবস্ক্রিপশনের খরচ ২০ থেকে ২০০ ডলারের মধ্যে।
আর্থিক অবস্থা ও বিনিয়োগ
রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, চলতি বছরের শেষে ওপেনএআইয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যদিও প্রতিষ্ঠানটি এখনো লোকসানসহ গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে বড় বিনিয়োগ করছে। ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে আয় ছিল প্রায় ৪৩০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি, কিন্তু একই সময়ে ২৫০ কোটি ডলারের লোকসানও গুনেছে।
নতুন ফিচার ও আয় বৃদ্ধির পরিকল্পনা
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ওপেনএআই শপিং এবং বিজ্ঞাপনভিত্তিক নতুন ফিচারের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সম্প্রতি চালু করা ‘পার্সোনাল শপিং অ্যাসিস্ট্যান্ট’ ফিচারটি সেই পরিকল্পনার অংশ।
ব্যবহারকারীর সংখ্যা ও প্রযুক্তিগত বিনিয়োগ
ওপেনএআইয়ের সিইও স্যাম অল্টম্যান গত অক্টোবরে জানিয়েছেন, চ্যাটজিপিটির সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা বর্তমানে ৮০ কোটি ছুঁয়েছে। দ্রুত বর্ধমান এই ব্যবহারকারীর সংখ্যা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি এআই চিপ ও প্রযুক্তি অবকাঠামোর বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।
চ্যাটজিপিটির দ্রুত বৃদ্ধি ও জনপ্রিয়তা
চ্যাটজিপিটি ২০২২ সালের নভেম্বরে চালু হওয়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যে ১০ কোটি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী অর্জন করে এবং দ্রুতই বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় কনজিউমার এআই পণ্য হয়ে ওঠে। এখন, এক বছরের মধ্যে সাপ্তাহিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি ছাড়িয়েছে এবং মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতি মাসে ৫-১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উদ্বেগ ও চ্যালেঞ্জসমূহ
তবে চ্যাটজিপিটির জনপ্রিয়তার সঙ্গে কিছু উদ্বেগও দেখা দিয়েছে, যেমন অতিরিক্ত প্রশংসায় ব্যবহারকারীদের মাঝে এআইয়ের ‘ভুল ধারণা’ তৈরি হওয়া।
ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি
চ্যাটজিপিটির প্রডাক্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক টারলি বলেন, “ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন চ্যাটজিপিটিকে কাজে লাগিয়ে নতুন কিছু শিখছে, নতুন ধারণা ও কাজ তৈরি করছে। আগে যেসব সমস্যা সমাধান কঠিন মনে হত, সেগুলো এখন আরও সহজ ও ভালোভাবে সমাধান হচ্ছে।”
চ্যাটজিপিটি কেবল প্রযুক্তি নয়, এটি মানুষের কাজ করার পদ্ধতিতে এক বিপ্লব ঘটাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক ব্যবসায় নতুন উচ্চতায় পৌঁছানোর প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। সূত্র: দি ইনফরমেশন ও রয়টার্স।