বহু ধরে পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে পৃথিবী সম্পর্কে বিপুল পরিমাণ ডেটা বা তথ্য সংগ্রহ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন, দাবানল ও আবহাওয়াসহ আরও অনেক তথ্য সংগ্রহ করে স্যাটেলাইটগুলো। তবে এত বিশাল পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করা অনেকটা সময়সাপেক্ষ এবং শ্রমসাধ্য কাজ। তাই ডেটাগুলো বিশ্লেষণে ও সর্বসাধারণের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট ব্যবহার করবে নাসা।
জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাইক্রোসফটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘আর্থ কোপাইলট’ চ্যাটবট তৈরি করেছে নাসা। নতুন এআইভিত্তিক চ্যাট টুলটি বিশেষভাবে ভূস্থানিক স্যাটেলাইট চিত্র এবং ডেটা অ্যাকসেস করার প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছ। এটি ব্যবহার করে উপকৃত হবে বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে কেবল কিছু নির্দিষ্ট গবেষক এবং বিজ্ঞানীই এই ডেটার অর্থ বের করতে পারে। তবে আর্থ কোপাইলট অগণিত ব্যবহারকারীরা কাছে তথ্য পৌঁছে দেবে। আগ্রহী ব্যক্তিরা সরলভাবে প্রশ্ন করে টুলটির সঙ্গে কথোপকথন করতে পারবে। বিষয়টি চ্যাটজিপিটি বা অন্যান্য জেনেরেটিভ-এআই চ্যাট টুল ব্যবহারের মতোই।
ব্যবহারকারীরা সহজেই একে প্রশ্ন করতে পারবেন বলে ধারণা করছে মাইক্রোসফট। যেমন: ‘সানিবেল দ্বীপে হারিকেন ইয়ানের প্রভাব কী ছিল?’ বা ‘কোভিড-১৯ মহামারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বায়ুর গুণমানকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?। এরপর আর্থ কোপাইলট সংশ্লিষ্ট ডেটা সেটগুলোতে গভীরভাবে অনুসন্ধান করবে এবং উত্তর দেবে। এই উত্তরগুলো ডেটাগুলো চাইতে সহজে বোঝা যাবে।
নাসার ‘আর্থ সায়েন্স ডেটা সিস্টেম প্রোগ্রাম’ মহাকাশে থাকা সেন্সর এবং যন্ত্র থেকে বিপুল পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ করে। মাইক্রোসফট চ্যাটবটটি সম্পর্কে বলছে, এই ডেটা সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করে, বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থান থেকে শুরু করে ভূমির পরিবর্তন, মহাসাগরের তাপমাত্রাসহ আরও অনেক কিছু। তবে এই তথ্যের বিশাল পরিমাণ এবং জটিলতা অনেক সময় বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠতে পারে।
এসব তথ্য বোঝার জন্য টেকনিক্যাল ইন্টারফেসে নেভিগেট করার ক্ষমতা, ডেটা ফরম্যাট বোঝার এবং জিওস্প্যাটিয়াল বিশ্লেষণের জটিলতা আয়ত্ত করার মতো দক্ষতা সবার থাকে না। এআই এই প্রক্রিয়াটিকে সহজ করতে পারে। পৃথিবীর ডেটা থেকে কয়েক সেকেন্ডে অন্তর্দৃষ্টি পেতে পারবেন।
বর্তমানে চ্যাটবটটির তার নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করেছে নাসার বিজ্ঞানী এবং গবেষকেরা।
এই চ্যাটবটের মাধ্যমে পৃথিবীর সংক্রান্ত ডেটা অনুসন্ধান, আবিষ্কার এবং বিশ্লেষণ করা ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।