ঢাকার বাইরেই আবাসনের বড় সম্ভাবনা

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত
দেশের আবাসন খাতের শুরুর দিককার প্রতিষ্ঠান ‘বিল্ডিং ফর ফিউচার’। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুই সতীর্থ কাজী আনিস উদ্দিন ও তানভিরুল হক প্রবাল এটির প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে অনেকটা শূন্য পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু করে বিল্ডিং ফর ফিউচার। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তানভিরুল হক প্রবাল-এর সঙ্গে তাঁর ছেলেবেলা, ব্যবসায় হাতেখড়ি, আবাসন ব্যবসার ভবিষ্যৎসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপচারিতায় বসেছিলেন শুভংকর কর্মকার

এপ্রিলজুড়েই এবার ঢাকাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় ছিল তাপপ্রবাহ। মে মাসের শুরু থেকে বৃষ্টি হবে, এমন আভাস দিচ্ছিলেন আবহাওয়াবিদেরা। তবে এপ্রিল যেন শেষই হচ্ছিল না। গরমে হাঁসফাঁস দশা। এপ্রিল শেষ হওয়ার এক দিন আগে তপ্ত দুপুরে পান্থপথের ‘গগন শিরীষ’ ভবনে হাজির হলাম। ভবনটির নিচের দিকের দুটি ফ্লোর নিয়ে বিল্ডিং ফর ফিউচারের কার্যালয়। অভ্যর্থনাকক্ষ পেরিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষে প্রবেশ করতেই স্বাগত জানালেন তানভিরুল হক প্রবাল।

শুরুতেই যথারীতি তাপপ্রবাহের প্রসঙ্গ এল। তানভিরুল হক বলেন, শহরজুড়ে সবুজ বাড়াতে হবে। উত্তরা থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে অফিসে আসার সময় দুই পাশে শুধু কংক্রিটের জঙ্গল দেখি। প্রতিটি বাসাবাড়ি কিংবা বাণিজ্যিক ভবনের বারান্দায় লতানো গাছ লাগানো যেতে পারে। ছাদেও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো যায়। নগরবাসীকে এমন কাজে উদ্বুদ্ধ করতে হোল্ডিং ট্যাক্সে ছাড় দিতে পারে সিটি করপোরেশন।

সংগীতের মানুষ যেভাবে ব্যবসায়
বাবা-দাদার বাড়ি নোয়াখালী হলেও তানভিরুল হকের জন্ম ঢাকায়। বেড়ে উঠেছেন আরামবাগ ও সেগুনবাগিচায়। পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার এলাকার সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু। পরে একাত্তরে সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় স্বাধীনতার পর বাবা তাঁকে মতিঝিল গভর্নমেন্ট বয়েজ হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করে দেন। চতুর্থ শ্রেণিতে তাঁকে আর পড়তে হলো না। 

তানভিরুল হকের মা কবি খালেদা এদিব চৌধুরী। প্রথম জীবনে তিনি পূর্বদেশ পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। পরে অবশ্য সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। তিনি কবি ও লেখক হিসেবে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। অন্যদিকে বাবা আনোয়ারুল হক ছিলেন কস্ট অ্যাকাউনট্যান্ট। মা–বাবা দুজনই গানবাজনা পছন্দ করতেন। সেই সূত্রে ছেলেবেলা থেকে গান শিখতেন তানভিরুল। তাঁদের তিন ভাইবোনের মধ্যে ছোট সুমনা হক আশির দশকে জিঙ্গেল গায়িকা হিসেবে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।

তানভিরুল বলেন, ‘ছেলেবেলায় খেলাধুলা খুব একটা করতাম না। গান করতাম, গিটার বাজাতাম। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় পুরস্কার পেয়েছি। এখনো সময় পেলেই নিজের জন্য গান করি। যদিও সেভাবে সময় পাই কম।’

১৯৭৮ সালে মাধ্যমিকের পর ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তানভিরুল হক। ১৯৮১ সালে বুয়েটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। বুয়েটে পড়ার সময়ই ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি শুরু। পাশাপাশি নাটক ও গানের সঙ্গেও ছিলেন। একসময় ছাত্র ইউনিয়নের সাংস্কৃতিক সম্পাদক ছিলেন। তানভিরুল হকের ভাষায়, ‘পড়াশোনায় মনোযোগ কম থাকলেও যথাসময়ে, অর্থাৎ ১৯৮৬ সালে পাস করে বের হই।’ 

বুয়েট থেকে বের হয়েই নির্মাণ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মজীবন শুরু করলেন। কোম্পানিটি মতিঝিলে তখন সেনাকল্যাণ ভবনের নির্মাণকাজ করছে। মাটির নিচের কাজ চলছে। প্রতিদিন সকালেই সেখানে পৌঁছে যান। বুয়েটে কয়েকজন বড় ভাই সেই প্রকল্পে কাজ করছিলেন। তাঁরা সহযোগিতা করায় প্রথম চাকরি ভালোই চলছিল। একই সময়ে ভর্তি হয়ে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএতে সন্ধ্যাকালীন এমবিএ কোর্সে। দিনে চাকরি আর রাতে এমবিএ-এভাবে এক সেমিস্টার শেষ করেন। একপর্যায়ে চাকরি ও এমবিএ-দুটোই ছাড়লেন।

তারপর বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশনের (বিটিএমসি) মেঘনা টেক্সটাইল মিলে যোগ দেন তানভিরুল হক। টঙ্গীতে এই কারখানার নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত হলেন তিনি।

কয়েক বছর না যেতেই মাথায় ঘুরতে থাকল-কিছু একটা করতে হবে, মানে ব্যবসা–বাণিজ্য। অন্যদিকে কাজী আনিস উদ্দিনও প্রায়ই বলেন, ‘চাকরিবাকরি বাদ দাও। আসো, নতুন কিছু করি।’

তানভিরুল বলেন, ‘একপর্যায়ে চাকরি ছেড়ে দিলাম। আবাসন ব্যবসা করার মনস্থির করলাম। কিছু ছাড়াই (মূলধন) মাঠে নামলাম। সম্বল ছিল একটি ৫০ সিসির মোটরসাইকেল। সেটাও কেনার জন্য ঋণ দিয়েছিল ছোট বোন। একপর্যায়ে পার্টনারের শ্বশুর বললেন, তাঁর গুলশানের জমি আমাদের দিতে চান। এভাবেই আমরা প্রথম জমি পেলাম। শুরু হলো আমাদের আবাসন ব্যবসা। ওই প্রকল্পের নাম দিয়েছিলাম আমরা ব্লু অর্কিড।’

কৌতূহল নিয়ে জানতে চাইলাম, ‘জমি তো পেলেন, কিন্তু টাকা?’ হাসতে হাসতে তানভিরুল হক বলেন, ‘আমাদের টাকাপয়সা কিছুই ছিল না। তবে সাহস ছিল। জমি পাওয়ার পর টাকা তো লাগবে। আমরা তখন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংকে-বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক-ঋণের জন্য গেলাম। ছাত্ররাজনীতি করার কারণে অনেকের সঙ্গে জানাশোনা ছিল। সেই সুবাদে ১৯৯৪ সালে জমি বন্ধক দিয়ে এএনজেড গ্রিন্ডলেজ ব্যাংক থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ পেলাম।’

পরিকল্পিত আবাসনে জোর
তিন দশকের যাত্রায় ১০৪টি আবাসন প্রকল্পের ২ হাজার ২০০ অ্যাপার্টমেন্ট গ্রাহকদের হস্তান্তর করেছে বিল্ডিং ফর ফিউচার। গুলশান, উত্তরা, মতিঝিল, মাদানী অ্যাভিনিউ, মিরপুর, বারিধারা, আজিমপুর, ধানমন্ডি, ওয়ারীসহ বিভিন্ন এলাকায় ছিল এসব প্রকল্প। বর্তমানে পাঁচটি বাণিজ্যিক ও আটটি আবাসিক প্রকল্পের কাজ চলমান।

তানভিরুল হক বলেন, ‘প্রথম প্রকল্পের পরের কয়েকটাও গুলশানে। ধীরে ধীরে শহরের অন্যান্য এলাকায়ও প্রকল্প করতে থাকলাম। শুরু থেকেই আমরা আমাদের আবাসন প্রকল্পে প্রচুর আলো-বাতাস চলাচলের পাশাপাশি সবুজায়নে জোর দিলাম। ভবনের বাসিন্দাদের কিসে সুবিধা ও আরাম, সেদিকেও নজর দিলাম।’

শুরু থেকেই নিজেদের নির্মিত আবাসিক ভবনগুলোর নাম ফুলের নামে রাখছে বিল্ডিং ফর ফিউচার। আগেই বলেছি, প্রথম ভবনটির নাম ছিল ব্লু অর্কিড। তাঁদের কয়েকটি প্রকল্পের নাম হচ্ছে অপরাজিতা, কৃষ্ণচূড়া, রঙ্গন, ম্যাগনোলিয়া পয়েন্ট, কামিনী, টিউলিপ, হাসনাহেনা, দোলনচাঁপা ইত্যাদি। এমনও হয়েছে, সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর শুধু ফুলের নাম দেওয়া নিয়ে জটিলতায় জমি ছেড়ে দিয়েছেন তাঁরা। বর্তমানে যদিও মানুষের নামের সঙ্গে ফুলের নাম যুক্ত করেও আবাসন প্রকল্পের নাম করা হচ্ছে।

তিন দশকের ব্যবসায় কোন সমস্যা বেশি ভুগিয়েছে, জানতে চাইলে বিল্ডিং ফর ফিউচারের এমডি বলেন, ‘চাঁদাবাজি। ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প করতে গিয়ে চাঁদাবাজদের খপ্পরে পড়তে হয়েছে। তবে কোথাও চাঁদা দিয়ে আমি কাজ করিনি।’ এ প্রসঙ্গে ব্যবসার শুরুর দিকের এক চাঁদাবাজের গল্প বললেন তানভিরুল হক, ‘নব্বইয়ের দশকের ঘটনা। মিরপুরে একটা প্রকল্পের কাজ চলছে। একদিন শুনলাম, স্থানীয় এক মাস্তান আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। আমার পরিচিত লম্বা চুলওয়ালা একটি ছেলেকে বাইকের পেছনে উঠিয়ে নিলাম। ওই ছেলেকে তার প্যান্টের পকেটে একটা স্ক্রু ড্রাইভার হাত দিয়ে এমনভাবে ধরে রাখতে বললাম, যাতে মনে হয়, পকেটে রিভলবার আছে। যা-ই হোক, ওই মাস্তানের সঙ্গে দেখা হলো। বুঝিয়ে-সুঝিয়ে তাকে শান্ত করলাম। তার সঙ্গে যখন কথা বলছিলাম, লম্বা চুলওয়ালা ছেলেটা তখন একটু দূরে পকেটে স্ক্রু ড্রাইভার হাতে দাঁড়িয়ে ছিল।’

অনেক নতুনের পেছনে তাঁরা
আবাসন ব্যবসার পাশাপাশি নির্মাণ, প্রকাশনা ও আসবাব কোম্পানি করেছেন তানভিরুল হক ও তাঁর ব্যবসায়িক অংশীদার। হাউজিং অ্যান্ড টেকনোলজি নামে তাঁদের আরেকটি প্রতিষ্ঠান দেশে প্রথম ভবনের অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেলের (এসিপি) কাজ শুরু করে। বসুন্ধরা শপিং মলের বাইরের অ্যালুমিনিয়াম প্যানেল তাঁরা সরবরাহ করেছেন। যমুনা ফিউচার পার্ক, মোমেন ডিস্ট্রিক্ট টাওয়ার, কনকর্ড পুলিশ প্লাজাসহ বিভিন্ন ভবনের বাইরের কাজ করেছেন তাঁরা।

তানভিরুল হক বলেন, ‘দেশে আমরাই প্রথম সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্ট বা স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ করেছি। ২০০৬ সালে গুলশান এলাকায় নির্মিত এসব অ্যাপার্টমেন্টের আয়তন ৮৫০ বর্গফুট। বর্তমানে এসব অ্যাপার্টমেন্টে বিদেশিরাই বেশি থাকেন। পরবর্তী সময়ে অন্য অনেক আবাসন কোম্পানি স্টুডিও অ্যাপার্টমেন্ট করেছে।’

ঢাকা ও আশপাশের এলাকা, চট্টগ্রামসহ অন্য বিভাগীয় এলাকা ছাড়াও জেলা শহরে অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প করেছে বিল্ডিং ফর ফিউচার। প্রতিষ্ঠানটির এমডি বলেন, ‘আমরা ঢাকার বাইরে আবাসন প্রকল্প শুরু করেছি। ইতিমধ্যে যশোর ও রংপুরে একটি করে প্রকল্প করছি। তারপর হয়তো নোয়াখালীতে করব।’

বাণিজ্য সংগঠনের নেতৃত্বে
শেল্‌টেকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রয়াত তৌফিক এম সেরাজের হাত ধরে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের নেতৃত্বে তানভিরুল হকের হাতেখড়ি। ২০০৪ সালে যুগ্ম সম্পাদক, ২০০৬ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ২০০৮ সালে সভাপতি হন তিনি।

তানভিরুল হক বলেন, ‘রিহ্যাবের পর্ষদে দায়িত্ব পালনকালে ২০০৪ সালে আমরা প্রথম দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে আবাসন মেলা করেছিলাম। পরে লন্ডন, দুবাই ও ইতালিতেও আমরা মেলা করেছি।’

সড়ক-মহাসড়ক, ভবন, সেতু ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কনস্ট্রাকশন ইন্ডাস্ট্রির (বিএসিআই) সঙ্গে বর্তমানে যুক্ত হয়েছেন তানভিরুল হক। দুই মেয়াদে সংগঠনটির পরিচালক (অর্থ) ছিলেন তিনি। বর্তমানে উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তানভিরুল হক বলেন, ‘আমরা ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নির্মাণ বা কনস্ট্রাকশন ব্যবসাও করেছি। তখন আমরা ইউএস আর্মি ও ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) প্রকল্পের অধীন ৬০টি সাইক্লোন সেন্টার নির্মাণ করি।’

আবাসন ব্যবসার ভবিষ্যৎ
আবাসন ব্যবসায় ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে চাইলে তানভিরুল হক বলেন, ঢাকা জঙ্গল হয়ে গেছে। বেশি উচ্চতার ভবন নির্মাণের অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। জমির দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে। নির্মাণসামগ্রীর দামও ঊর্ধ্বমুখী। ফলে সস্তায় ফ্ল্যাট করার আর কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে ঢাকার অ্যাপার্টমেন্ট কেনা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

মানুষের ঢাকামুখিতা কমাতে হবে। কারণ, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, আগামী দিনে ঢাকায় নিম্নমধ্যবিত্তদের থাকার কোনো জায়গা থাকবে না। লন্ডন ও কলকাতার মতো পুরোনো শহরে প্রতিদিন সকালে ট্রেনে করে মানুষ কর্মস্থলে আসেন। আবার বিকেলে ট্রেনে করে ফিরে যান। আমাদেরও সেভাবে চিন্তা করতে হবে। যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত করতে হবে যাতে মানুষ গাজীপুর, টঙ্গী, নারায়ণগঞ্জ কিংবা নরসিংদী থেকে সকালে এসে কাজ করে আবার বাড়ি ফিরে যেতে পারেন, এমনটাই বললেন তানভিরুল হক।

ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই বিল্ডিং ফর ফিউচার যশোরে আবাসন প্রকল্প করছে বলে জানান তানভিরুল হক। তিনি বলেন, ‘মানুষকে তার শিকড়ে ফেরাতে হবে। এ জন্য যেখানে কেউ যাচ্ছে না, সেখানে আমরা যাচ্ছি। যশোরে আবাসন প্রকল্প করেছি। যদিও বিক্রি করা কঠিন হবে। ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে নাগারিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে জেলা শহরেও মানুষ অ্যাপার্টমেন্ট কিনবেন। যশোরে আইটি পার্ক হয়েছে। সেখানকার উদ্যোক্তারা ঢাকায় থাকবেন না। তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা আছে। তাঁদের ভালো অ্যাপার্টমেন্ট দিলে তাঁরা কিনবেন। ফলে আমি মনে করি, ভবিষ্যতে ঢাকার বাইরের আবাসনেই বড় সম্ভাবনা দেখা দেবে।’

 শেষ কথা
১৯৮৮ সাল থেকে উত্তরায় বাস করছেন প্রকৌশলী তানভিরুল হক ও আইসিডিডিআরবির বিজ্ঞানী আলিয়া নাহিদ দম্পতি। তাঁদের এক ছেলে। বাবার মতো জারিফ তানভির হকও গানবাজনা নিয়ে থাকতে ভালোবাসেন। ব্যবসায় এখনো সেভাবে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি নিয়ে মোটেও চিন্তিত নন বাবা। বললেন, ‘আমরা শূন্য হাতে ব্যবসা শুরু করেছি। কোনো কিছু চাওয়া ছিল না।’

ব্যবসা থেকে অবসর নেওয়ার পর শাস্ত্রীয় সংগীত নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চান আবাসন খাতের তিন দশকের অভিজ্ঞ এই ব্যবসায়ী।

লেখাটি প্রথম আলোর বিশেষ ম্যাগাজিন বর্ণিল বসত মে ২০২৪ সংখ্যায় প্রকাশিত

আপনার মতামত দিন