বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবার ‘মিস্টারবিস্ট’ (জিমি ডোনাল্ডসন) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ভিডিওর দ্রুত উন্নতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁর আশঙ্কা, এআই ভিডিওর ক্রমবর্ধমান প্রভাব ইউটিউবের লাখো কনটেন্ট নির্মাতার জীবিকা ও ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
মানুষের ভিডিও আর এআই ভিডিও, পার্থক্য কোথায়?
সম্প্রতি এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে মিস্টারবিস্ট লিখেছেন, “এআই দিয়ে তৈরি ভিডিওর মান এখন এতটাই উন্নত যে, তা মানুষের বানানো ভিডিওর সঙ্গে প্রায় আলাদা করা যায় না।”
তিনি আরও যোগ করেন, এই পরিবর্তন ইউটিউবের কনটেন্ট ইকোসিস্টেমে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। যখন এআই ভিডিও সাধারণ ভিডিওর মতোই হবে, তখন ইউটিউবে মানুষের তৈরি কনটেন্টের ভবিষ্যৎ কী হবে-এই ভাবনাই তাঁকে ভয় পাইয়ে দেয়।
ওপেনএআইয়ের সোরা ২: এআই ভিডিও তৈরিতে নতুন দিগন্ত
মিস্টারবিস্টের মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন ওপেনএআই উন্মোচন করেছে তাদের নতুন প্রজন্মের ভিডিও তৈরির অ্যাপ ‘সোরা ২’। অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের জন্য এআই দিয়ে বাস্তবসম্মত ভিডিও বানানো আরও সহজ করে তুলেছে। তবে কপিরাইট ও মৌলিকতা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এ নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। একই সঙ্গে মেটাও তাদের মেটা এআই অ্যাপে নতুন ‘এআই ফিড’ চালু করেছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা শুধুমাত্র এআই-নির্ভর কনটেন্ট শেয়ার করতে পারবেন।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এসব উদ্যোগ ভবিষ্যতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কনটেন্টের ধরণ সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে।
এআইয়ের প্রতি আগ্রহ, তবে সমালোচনার মুখেও
যদিও বর্তমানে মিস্টারবিস্ট এআই ভিডিও নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন, তবু তিনি নিজেও কনটেন্ট নির্মাণে এআই ব্যবহারের পথিকৃৎদের একজন।
এ বছরের শুরুতে তিনি ইউটিউব ভিডিওতে এআই ব্যবহার শুরু করেন। এছাড়া ‘ভিউস্ট্যাটস’ নামে একটি ওয়েবসাইট চালু করেন, যেখানে এআইচালিত থাম্বনেইল টুল ব্যবহার করা যেত। কিন্তু এই টুলের কারণে ইউটিউবের থাম্বনেইল ডিজাইনারদের কাজের সুযোগ কমে যাওয়ার আশঙ্কায় তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে অবশেষে টুলটি সরিয়ে ফেলেন তিনি।
মানুষের সৃজনশীলতা কি টিকবে?
এআই প্রযুক্তি যতই উন্নত হচ্ছে, মানুষের সৃজনশীলতা ও পেশাগত স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন ততই বাড়ছে। মিস্টারবিস্টের মতো জনপ্রিয় নির্মাতার উদ্বেগ প্রমাণ করে, ডিজিটাল দুনিয়ায় এআই শুধু সুবিধা নয়, একটি বড় চ্যালেঞ্জও বটে। সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে