এনএফসি প্রযুক্তির মাধ্যমে গোপনে অর্থ চুরির নতুন কৌশল  

প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট, ২০২৫
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png টেকভয়েস২৪  ডেস্ক
https://techvoice24.com/assets/images/logoIcon/logo.png
  ছবি: সংগৃহীত

বর্তমান সময়ে মোবাইল ফোনের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে সাইবার হুমকির মাত্রাও। সম্প্রতি এমনই একটি হুমকি হিসেবে সামনে এসেছে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন (এনএফসি) প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে পরিচালিত এক ধরনের সাইবার প্রতারণা, যার মূল চরিত্র ফ্যানটম কার্ড নামের একটি ট্রোজান ম্যালওয়্যার।

ফ্যানটম কার্ড কীভাবে কাজ করে?
ফ্যানটম কার্ড প্রথমে লক্ষ্য করে ব্রাজিলের ব্যাংক গ্রাহকদের, তবে এখন এটি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ম্যালওয়্যারটি ছড়ানো হচ্ছে গুগল প্লে-স্টোরের মতো দেখতে ভুয়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে, যেখানে ব্যবহারকারীদের ‘প্রোটেকসাও কার্তোইস’ নামের একটি ভুয়া অ্যাপ ডাউনলোড করতে বলা হয়।

এই অ্যাপে থাকে ভুয়া ইতিবাচক রিভিউ, যা ব্যবহারকারীদের বিশ্বাস অর্জনে সহায়তা করে। অ্যাপটি ইনস্টল করার পর ব্যবহারকারীদের নির্দেশ দেয়া হয় ফোনের পেছনে তাদের ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড রাখতে। এরপর ফোনের স্ক্রিনে দেখানো হয় ‘কার্ড শনাক্ত হয়েছে, অথেনটিকেশন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কার্ড কাছে রাখুন’। কিন্তু এই সময়েই ম্যালওয়্যারটি কার্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করে সাইবার অপরাধীদের সার্ভারে পাঠিয়ে দেয়। পরে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে পিন কোড চাওয়া হয় এবং সেখান থেকেই আর্থিক চুরির পথ তৈরি হয়। এই এনটায়ার প্রক্রিয়ায় কোনো রকম সন্দেহ ছাড়াই ঘটে যায় একটি সফল আর্থিক প্রতারণা।

আরও বিপজ্জনক টুলস
ফ্যানটম কার্ডের পাশাপাশি সুপারকার্ড এক্স এবং কিংএনএফসি নামের আরও কিছু টুল রয়েছে, যেগুলো একইভাবে এনএফসি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি করে। এসব টুলের মাধ্যমে সাইবার অপরাধীরা ক্লোন করা কার্ড দিয়ে পস মেশিন বা এটিএম ব্যবহার করে প্রতারণামূলক লেনদেন করে।

নেদারল্যান্ডসভিত্তিক সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান থ্রেট ফেবরিক জানিয়েছে, ব্রাজিলের পরিচিত সাইবার অপরাধী গোওয়াননানো এই হামলার পেছনে রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী প্রভাব
নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান রিসিকিউরিটি জানিয়েছে, ফিলিপাইনে বর্তমানে এনএফসি প্রতারণার হার দ্রুত বাড়ছে। এসব ক্ষেত্রে বৈধ পস মেশিন থেকে লেনদেনের অনুরোধ আসায় প্রতারণাগুলো সহজে শনাক্ত করা যায় না, ফলে ব্যবহারকারীরা বেশিরভাগ সময় বুঝতেই পারেন না যে তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।

কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
অজানা বা সন্দেহজনক উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে না। শুধুমাত্র গুগল প্লে-স্টোর বা অফিসিয়াল অ্যাপ স্টোর ব্যবহার করতে হবে। এনএফসি ফিচারটি শুধুমাত্র প্রয়োজনের সময় চালু রাখতে হবে। কোনো অ্যাপ কার্ড স্ক্যান বা পিন চাইলেই সতর্ক থাকতে হবে। আপনার ব্যাংক থেকে পাঠানো নোটিফিকেশন ও এসএমএস মনোযোগ দিয়ে পড়ে সে অনুসারে কাজ করতে হবে। ফোনে শক্তিশালী অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। 

তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবন সহজ করেছে, তেমনি কিছু অসাধু চক্র এ প্রযুক্তিকেই ব্যবহার করে আমাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে ফেলছে। বিশেষ করে এনএফসি প্রযুক্তির মতো সহজলভ্য এবং দ্রুতগতির ফিচার যখন সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় না, তখন তা বড় ধরনের প্রতারণার দরজা খুলে দিতে পারে। তাই আমাদেরকে সচেতন থাকতে হবে। সূত্র: দ্য হ্যাকার নিউজ
 

image

আপনার মতামত দিন