মহাকাশপ্রেমীদের প্রতীক্ষার যেন শেষ নেই। আবারও স্থগিত হলো স্পেসএক্সের বহুল প্রতীক্ষিত স্টারশিপ রকেটের পরীক্ষামূলক ফ্লাইট। উৎক্ষেপণের মাত্র কয়েক মিনিট আগে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের স্টারবেস সাইট থেকে উড্ডয়ন বন্ধ হয়ে যায়। এটি ছিল দশমবারের মতো বিলম্ব, যা স্পেসএক্সের জন্য এক বড় ধাক্কা।
বিশালাকৃতির (প্রায় ৪০০ ফুট লম্বা) এই রকেটের মূল লক্ষ্য ছিল রিইউজেবল রকেট প্রযুক্তির অগ্রগতি, বুস্টার অবতরণ, তাপ ঢালের স্থায়িত্ব ও উপগ্রহ স্থাপন প্রযুক্তির পরীক্ষা। কিন্তু উৎক্ষেপণের আগ মুহূর্তে আবারও আটকে গেল অভিযান।
মহাকাশে যেতে চায়, কিন্তু কেন থমকে যাচ্ছে স্টারশিপ?
পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেট তৈরির ক্ষেত্রে স্টারশিপকে ধরা হয় এক বিপ্লবী পদক্ষেপ। তবে এর জটিল প্রযুক্তি, বিপুল আকৃতি এবং উচ্চমাত্রার ঝুঁকি এর প্রতিটি পরীক্ষাকে কঠিন করে তুলছে। স্পেসএক্স চাইছে ঝুঁকি না নিয়ে ধাপে ধাপে এগোতে, আর সেটিই প্রতিবার বিলম্বের পেছনে অন্যতম কারণ। এবারের পরীক্ষায় মেক্সিকো উপসাগরে বুস্টার অবতরণ ও ভারত মহাসাগরের ওপরে তাপ ঢাল পরীক্ষা করার পরিকল্পনা ছিল। রকেটটি মহাকাশে মক স্টারলিংক স্যাটেলাইট স্থাপনও করতে পারত, যদি উৎক্ষেপণ সফল হতো।
নাসা ও মাস্কের বড় স্বপ্ন ঝুলে আছে স্টারশিপে
নাসা তার বহুল আলোচিত আর্টেমিস প্রোগ্রামের জন্য স্টারশিপকেই বেছে নিয়েছে। ২০২৭ সালের মধ্যে নভোচারী পাঠানো হবে চাঁদে। এই পরিকল্পনার মূল ভরসাই এই রকেট। অন্যদিকে ইলন মাস্কের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হলো মানুষকে মঙ্গল গ্রহে পৌঁছানো, আর স্টারশিপকেই তিনি দেখছেন সেই স্বপ্নের বাহন হিসেবে।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
স্পেসএক্স জানিয়েছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটি দ্রুত চিহ্নিত করে সমাধানের চেষ্টা চলছে। প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে, এ সপ্তাহের মধ্যেই আবারও উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিতে পারবে তারা। মহাকাশ গবেষণার এই দুঃসাহসিক পথে স্টারশিপ একটি মাইলফলক হতে পারে। তবে প্রতি ধাপেই প্রমাণ হচ্ছে, এটি কোনো সহজ যাত্রা নয়। সূত্র: সিএনএন, দ্য ভার্জ, বিবিসি