তেলনির্ভর অর্থনীতি থেকে বহুমুখী বিনিয়োগের পথে এগোচ্ছে সৌদি আরব। এবার তাদের নজর পড়েছে গেমিং ও ই-স্পোর্টস ইন্ডাস্ট্রির দিকে। সৌদি সরকার গেমিং খাতে বিপুল বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে, যা আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশটিকে বিশ্ব গেমিং বাজারের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।
বিশ্বের শীর্ষ গেমিং কোম্পানিগুলোর শেয়ার কিনছে সৌদি
সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (PIF) ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় গেমিং কোম্পানির শেয়ার কিনেছে। ২০২৩ সালের শেষ দিকে তারা জাপানের জনপ্রিয় গেমিং প্রতিষ্ঠান নিন্টেন্ডো, মার্কিন গেম নির্মাতা অ্যাক্টিভিশন ব্লিজার্ড এবং ইলেকট্রনিক আর্টসের (EA) বিশাল পরিমাণ শেয়ার কিনেছিল।
এছাড়া, সৌদির গেমিং কোম্পানি সাভি গেমস গ্রুপ সম্প্রতি ৩৭.৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনার ঘোষণা দিয়েছে, যার মধ্যে গেম ডেভেলপমেন্ট, পাবলিশিং ও ই-স্পোর্টস অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
গেমিং-ই হবে সৌদির ভবিষ্যৎ আয়ের বড় উৎস?
সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান দেশকে প্রযুক্তি ও ডিজিটাল বিনোদনের কেন্দ্রে পরিণত করতে চান। তার ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার আওতায় গেমিং ইন্ডাস্ট্রির ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে গেমিং ও ই-স্পোর্টস খাত থেকে সৌদি আরব বছরে ১৩ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। বর্তমানে গ্লোবাল গেমিং মার্কেটের আকার ২০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি, আর সৌদি এই বাজারের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দখল করতে চায়।
মধ্যপ্রাচ্যে গেমিং ইন্ডাস্ট্রির উত্থান
মধ্যপ্রাচ্যে গেমিং ও ই-স্পোর্টসের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিশেষ করে সৌদি আরবে তরুণদের মধ্যে গেমিংয়ের প্রতি আগ্রহ ব্যাপক। এক জরিপে দেখা গেছে, সৌদির ৭০ শতাংশের বেশি তরুণ নিয়মিত ভিডিও গেম খেলে।
এই চাহিদাকে কাজে লাগাতে সৌদি সরকার গেম ডেভেলপারদের জন্য নতুন অবকাঠামো গড়ে তুলছে। ইতোমধ্যে গেমিং ও ই-স্পোর্টস একাডেমি চালু করা হয়েছে, যেখানে নতুন ডেভেলপার ও প্রো-গেমারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
বিশ্বের নজর এখন সৌদির দিকে
বিশ্বের শীর্ষ গেম নির্মাতারা এখন সৌদি আরবের বিনিয়োগের দিকে তাকিয়ে আছে। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, সৌদির এই উদ্যোগ গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে।
তবে সৌদির এই পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচনাও রয়েছে। অনেকে বলছেন, গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে সৌদির আগ্রহ শুধুই ব্যবসার জন্য নয়, বরং নিজেদের গ্লোবাল ইমেজ উন্নত করার কৌশলও হতে পারে।
যাই হোক, গেমিং বাজারে সৌদির এই শক্তিশালী উপস্থিতি বিশ্ব গেমিং ইন্ডাস্ট্রির চেহারা বদলে দিতে পারে, যা আগামী বছরগুলোতে আরও স্পষ্ট হবে। সূত্র: ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস