টেলিকম খাতে টেকসই উন্নয়নে জনকল্যাণমুখী ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ ও পারস্যের ইরানসহ মোট ৯টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে শুরু হওয়া এশিয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক কর্মশালার উদ্বোধনীতে বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এআই, ৫জি, আইওটি, ক্লাউড ও ব্লকচেইনসহ নতুন নতুন প্রযুক্তির জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে দক্ষিণ এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলোর মধ্যে জনকল্যাণমুখী একটি ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
ফয়েজ আহমেদ বলেন, এআই ৫জি এবং আইটির মতো ফ্রন্টিয়ার ও ইমার্জিং প্রযুক্তিতে জনগণের সমান অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে একটি শেয়ার্ড নলেজ হাব গড়ে তুলতে হবে। এতে আমরা সকলেই সমান ভাবে উপকৃত হব। এর ব্যতিক্রম হলে এসব প্রযুক্তির শক্তি জনগণের কোন কাজে আসবে না। আসলে টেকসই উন্নয়ন সংস্থান গড়ে তোলার জন্য একে অপরের শেয়ারিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এ সময় টেলিকম নীতিমালা ও আইন যেন কাউকে পিছনে না ফেলে সেজন্য সতর্ক করেন প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি ও টেলিকম বিষয়ক বিশেষ সহকারী।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের সাথে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিটি দেশই প্রায় একই ধরনের সমস্যার মধ্যে যাচ্ছে। টেলিকম শিল্পেও পরিবর্তন আসছে। প্রযুক্তির অপ্রতিরোধ্য গতিতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ছে। সমাজ, অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে এটা আঘাত আনতে পারে। এসব চ্যালেঞ্জ ছাপিয়ে সময় এসেছে সুলভে মানসম্মত ইন্টারনেট সেবা সহজ লভ্য করা এবং ডিজিটাল সার্ভিস বাড়ানো।
এক্ষত্রে পশ্চিমা বিশ্বের চেয়ে দক্ষিণ এশিয়ার রেগুলেটরি চ্যলেঞ্জ সবচেয়ে বেশি বলে মত প্রকাশ করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
তিনি বলেন, আমাদের রেগুলেটারেরা সহজলভ্য ইন্টারনেট ও ডিজিটাল সেবা দিতে নাগরিকদের চাপে থাকেন। ডিজিটাল রূপান্তরে সবাইকে অন্তর্ভূক্ত করতে চ্যালেঞ্জে থাকে। এসব বিষয়ে চিহ্নত করে সুযোগ গুলো খুঁজে বের করতে হবে। এজন্য সবাই মিলে এমন একটি উত্তম নীতি প্রণয়ন করতে হবে যা হবে জনকল্যাণকর।
এশিয়া-প্যাসিফিক টেলিকমিউনিটির মহাসচিব মাসনরি কুণ্ড’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) এমদাদ উল বারী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথোরিটির সদস্য ও এসএটিআরসি ওয়ার্কশপ অন পলিসি, রেগুলেশন এন্ড সার্ভিসেস এর সভাপতি ড. খাওয়ার সিদ্দিক খোকার।
আজ ঢাকায় শুরু হলো এশিয় টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক কাউন্সিলের আন্তর্জাতিক কর্মশালা সাউথ এশিয়ান কমিউনিকেশন রেগুলেটরস কাউন্সিল (এসএটিআরসি) ওয়ার্কশপ অন পলিসি, রেগুলেশন অ্যান্ড সার্ভিস। বৈশ্বিক ও পরিবর্তিত প্রযুক্তির প্রেক্ষাপটে নিজেদের টেলিযোগাযোগ খাতের নীতি, আইন ও সেবা নিয়ে চলমান এই কর্মশালায় যোগ দিয়েছেন আফগানস্তান, ইরান, নেপাল, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার নিয়ন্ত্রক কমিশনের সদস্যরা।
তিনদিন ব্যাাপী এই কর্মশালার ১০টি সেশনে নিয়ন্ত্রক কমিশনগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ছাড়াও টেলিকম অপারেটর ও টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০০ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন।